সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঝে কেটে গিয়েছে বছর দশেক। এখনও টাটকা কামদুনির তরুণীর মৃত্যুর ক্ষত এখনও দগদগে। কলকাতা হাই কোর্টের ফাঁসি রদের রায়ের পর সেই অভিশপ্ত দিনের কথা বারবার মনে পড়ছে নির্যাতিতার পরিবারের। চোখের জল বাঁধ মানছে না টুম্পা-মৌসুমীদের।
৭ জুন, ২০১৩: রাজারহাটের ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে রাস্তা থেকে জোর করে পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে যায় নজন দুষ্কৃতী। সেখানেই দফায় দফায় চলে গণধর্ষণ। এমনকী নির্যাতনের পর ছাত্রীটিকে ভেড়িতে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। বেশ কিছুক্ষণ পর গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৮ বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ছাত্রীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ঘটনার রাতে পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন কামদুনিবাসী। পুলিশ-জনতার সংঘর্ষে প্রায় খণ্ডযুদ্ধের রূপ নেয় ঘটনাস্থল। পুলিশের তিনটি গাড়িও ভাঙচুর হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৫ জুন পর্যন্ত নামানো হয় আধাসেনা।
দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। রিপোর্টে মেলে ধর্ষণের প্রমাণ। অপরাধীরা তরুণীর জ্ঞান থাকা অবস্থায় পা টেনে মাঝখান থেকে ছিঁড়ে ফেলে। আঘাত এত গুরুতর ছিল যে নাভিও ছিঁড়ে যায় তাঁর।
৯ জুন, ২০১৩: গ্রেপ্তার হয় আনসার আলি মোল্লা-সহ ৩ জন।
১০ জুন, ২০১৩: সিআইডি তদন্তভার নেয়। আনসার আলি মোল্লা, আমিনুর আলি, সইফুল আলি, ভুট্টো মোল্লা, এনামুল মোল্লা, আমিন আলি, ভোলানাথ নস্কর এবং গোপাল নস্কর-সহ ৯জন গ্রেপ্তার হয়।
১৭ জুন, ২০১৩: থমথমে কামদুনিতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেবে পুলিশ বলেই প্রতিশ্রুতি দেন।
২৯ জুন, ২০১৩: বারাসত জেলা আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। দিন দশেকের মাথায় পেশ হয় অতিরিক্ত চার্জশিট।
১২ আগস্ট, ২০১৩: কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মামলা বারাসত জেলা আদালত থেকে নগর ও দায়রা আদালতে স্থানান্তরিত হয়।
২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ সাল: কামদুনি কাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়।
২৮ জানুয়ারি, ২০১৬: আনসার আলি মোল্লা, সইফুল আলি, আমিন আলিকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয় শেখ ইনামুল ইসলাম, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলামকে। বেকসুর খালাস রফিক গাজি এবং নুর আলি। তদন্ত প্রক্রিয়া চলার মাঝে পাঁচিল ঘেরা জায়গার কেয়ারটেকার গোপাল লস্করের মৃত্যু হয়।
সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় দোষীরা।
৬ অক্টোবর, ২০২৩: প্রায় ৫ মাস শুনানির পর ফাঁসির সাজা রদ করে হাই কোর্ট। ২ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি চারজনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত। ফাঁসির সাজা রদ করে হাই কোর্ট। ২ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি চারজনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.