ফাইল ছবি।
বিক্রম রায়, কোচবিহার: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য। নেতা, মন্ত্রী থেকে শাসকদলের ছোট ছোট স্তরের কর্মীরাও এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। অভিযোগের ভিত্তি মূলত একটাই। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে দলের ঘনিষ্ঠ অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার এই অভিযোগ নিয়ে বলতে গিয়েই বিস্ফোরক কথা শোনা গেল রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর (Udayan Guha)গলায়। বাবা কমল গুহর আমলে দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন তিনি। বললেন, ”আমার বাবাও যখন বাম আমলে মন্ত্রী ছিলেন, তখন বাবাও অনেকগুলি ডিপার্টমেন্টে চাকরি দিয়েছিলেন। দলের ছেলেদের চাকরি দেওয়ার কাজ আগেও হতো, পরেও হবে।”
দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর বাবা কমল গুহ (Kamal Guha)ছিলেন বাম আমলে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের (FB) প্রতিনিধি ছিলেন। অর্থাৎ বাম শরিকদের একজন। বাবার সূত্রে উদয়নও দীর্ঘদিন বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর তিনি দলবদল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলের হাত ধরেন। দলনেত্রীও তাঁকে ভোটে লড়াইয়ের সুযোগ করে দেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নাটাবাড়ি থেকে হেরে যাওয়ার পর উপনির্বাচনে ফের অন্য কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান। দিনহাটা থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি জেতেন। তারপর তাঁকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারপর থেকে একাধিক বিষয় নিয়ে উদয়ন গুহ বহু বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। এবার নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তিনি বললেন, ”দলের লোকদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া নতুন নয়, বাম আমলেও হয়েছে। বাবা ছিলেন মন্ত্রী। তিনি কৃষি, সেচ ও PHE বিভাগে অনেককে চাকরি দিয়েছেন দিনহাটা, কোচবিহার থেকে। দলের স্বার্থেই সেসব করা হয়েছে। আমিও বহু সুপারিশ করেছি। তাই বলে কি ধরে নিতে হবে তাঁদের চেয়ে বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন কেউ ছিল না? দেখুন এটা যদি দুর্নীতি হয়, তাহলে বাম আমলেও হয়েছিল, পরেও হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, বাবার আমলে কেউ আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত ছিল না।”
উদয়নের বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য একমত নন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর মতে, চিরকূটে চাকরি হয় না। উদয়ন পাগলের মতো কথা বলছেন। অবশ্য উদয়নের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, উদয়ন যা বলেছেন, তা তো বাম আমলের দুর্নীতির ছবিরই প্রতিফলন। সেসময় তো সিপিএমের হোলটাইমারদের ঘরে ঘরে সকলেরই একটা সরকারি চাকরি ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.