অভিষেক চৌধুরী, কালনা: রাতের বেলা জানলা দিয়ে বউ পালানোর কথা গানে শুনেছিলেন। এবার বাস্তবে প্রেমিকের বাইকে চেপে বউকে পালাতে দেখলেন স্বামী। আর সেই দুঃখে, অপমানে শ্বশুরবাড়ির চিলেকোঠায় গলায় ফাঁস আত্মঘাতী হলেন কালনার (Kalna Youth) যুবক।
মৃতের নাম সুদেব দে (৩৯)। বাড়ি কালনার থানার বাঘনাপাড়া খাসপুর এলাকায়। সোমবার রাতে আত্মহত্যা করেন তিনি। এদিন কালনা মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ বছর আগে সুদেবের বিয়ে হয় কালনার সাহাপুর বেলতলা এলাকায়। তিনি চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তাই চাকরি সূত্রে অধিকাংশ সময়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। সেই সুযোগে প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী-র বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েকদিন আগে মহিলা তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ঘরও ছেড়েছিলেন। এদিকে স্ত্রীর চলে যাওয়ার খবর পেয়েই বাড়ি ফিরে আসেন সুদেব। স্ত্রীকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য শ্বশুরকে অনুরোধও করেন তিনি। কিন্তু শত অনুরোধেও প্রেমিককে ছেড়ে ফিরতে রাজি হননি সুদেবের স্ত্রী। আর তাই শ্বশুরবাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন সুদেব। এমনই অভিযোগ তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
মৃতের মেয়ে সুইটি হালদারের কথায়,“কালীপুজোর আগে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে মা চলে যায়। খবর পেয়ে বাবা চেন্নাইয়ের কর্মস্থল থেকে ফিরে আসে। মাকে ডেকে বারবার বোঝানো হলেও সে বাবাকে অপমান করত। বারবার বলত ওই ব্যক্তির সঙ্গেই থাকবে।” তিনি আরও জানান, “মায়ের চাহিদা মতো বাবা পোশাকও কিনে আনে। তারপরেও ওই ব্যক্তির সঙ্গে গাড়ি করে চলে যায়। এরপরেই বাবা মামারবাড়িতে চিলেকোঠায় আত্মঘাতী হয়।”
মৃতের শ্বশুর অজয় দেবনাথও জামাইয়ের মৃত্যুর জন্য মেয়েকে দায়ী করে জানান, “মেয়ে অন্য একজনের সঙ্গে পালিয়ে যায়। জামাই আমাদের বাড়িতেই ছিল। মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিল।এ ইরকম একটি ঘটনা ঘটে যাবে বুঝতে পারি।” যদিও মৃত ওই যুবকের কাছ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে তিনি লিখে গিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। লজ্জায় তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.