রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: পারিবারিক অশান্তি সহ্য করতে না পেরে নৌকা থেকে মাঝ গঙ্গায় ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা গৃহবধূর, মাঝিদের তৎপরতায় বাঁচল প্রাণ। ঘটনাটি ঘটছে কালনা ফেরিঘাটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার শেষ দুপুরে নৌকা করে কালনা থেকে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাটে যাওয়ার সময়ই হঠাৎই নদীতে ঝাঁপ দেন ওই মহিলা। যা দেখতে পেয়েই নৃসিংহ ঘাট থেকে এক মাঝি নৌকা নিয়ে মাঝ গঙ্গায় গিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেন। ঘাটে নিয়ে আসার পর সুস্থ হলে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে যায়। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালনা ফেরিঘাটে। যা নিয়েই মাঝিদের তৎপরতার প্রশসংসা করেছেন সকলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম বিতিকা মণ্ডল (২৮)। নৃসিংহপুরের বাসিন্দা। ১১ বছর আগে বনগাঁর বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের দুটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। তাঁর স্বামীর সঙ্গে অশান্তির জেরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। বিতিকা জানান, বিয়ের পর থেকেই তাঁর স্বামীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি লেগেই ছিল। গত পনেরো দিন আগে তাঁর স্বামী সুজিত তাঁকে বেধরক মারধর করে। তারপরেই বিতিকা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বর্ধমানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেই একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করছিল। কিন্তু শুক্রবার বর্ধমান থেকে তাঁর বাপের বাড়ি নৃসিংহপুর যাবে বলে ঠিক করে। সেই মতো এদিন বর্ধমান থেকে কালনা এসে নদী পথে কালনা ফেরিঘাট থেকে নৃসিংহপুর যাচ্ছিল বিতিকা। হঠাৎই নৌকা মাঝ নদীতে যাওয়ার সময় তিনি ঝাঁপ মারেন।
[ডুয়ার্সে মুখ্যমন্ত্রীর বাংলোয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, সাসপেন্ড ২ ইঞ্জিনিয়ার]
মাঝিদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের নির্দেশ অনুসারে নৌকায় চাপার জন্য সকলের জন্য লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই গৃহবধূ তাঁর লাইফ জ্যাকেট খুলে দিয়ে ঝাঁপ মেরেছিলেন। এমনকি নৌকা থেকে একটি লাইফ জ্যাকেট তাঁর দিকে ছুঁড়ে মারা হলেও তিনি লাইফ জ্যাকেট ধরেননি। ওই সময়ই উলটোদিক নৃসিংহপুর থেকে অন্য একটি নৌকায় কয়েক জন যাত্রী কালনা আসছিলেন। সেই নৌকার মাঝি তাপস বর্মন নৌকা ঘুরিয়ে গতি বাড়িয়ে ওই ডুবন্ত মহিলাকে উদ্ধার করেন। মাঝি তাপস বলেন, “ওই মুহূর্তে ডুবে যেতে দেখেই কিছু না ভেবেই ওই মহিলাকে উদ্ধার করেছি। চোখের সামনে কাউকে মরতে দেখে চুপ করে বশে থাকতে পারিনি”। বিতিকার মা দুর্গা মান্না বলেন, “মাঝিরা না উদ্ধার করলে আমার মেয়ে আর বাঁচত না। এর জন্য আমি চির ঋণী থাকব”।
[প্রেমে আপত্তি মেয়ের পরিবারের, যুবককে পিটিয়ে খুন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.