রেললাইন থেকে উদ্ধার তাদের ক্ষতবিক্ষত দেহ।
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: বিয়ের পর থেকেই পনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল গৃহবধূকে। স্বামীর কথা মতো বাপের বাড়ি থেকে কয়েকবার সেই পণের টাকাও এনে দিয়েছিলেন মহিলা। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি স্বামী। ফের পণের দাবি করা হয়। যা দিতে পারেননি গৃহবধূর বাবা। অভিযোগ, পণ দিতে না পারায় শারীরিক ও মানসিকভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছিল তাঁর উপর। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই ২ বছরের সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কালনার নাদনঘাট থানার জালাহাটি এলাকায়। মৃতের নাম মমতা চূর্ণকর (২৫) ও তাঁর ছেলে পিন্টু চূর্ণকর (২)। সোমবার বিকেলে কালীনগর স্টেশন সংলগ্ন রেললাইন থেকে মৃতদেহ দুটি দেখতে পায় স্থানীয়রা। ঘটনায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে নাদনঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ওই গৃহবধূর পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত স্বামী বিশ্বজিৎ চূর্ণকর ও ভাসুর রতন চূর্ণকরকে আটক করেছে পুলিশ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়েছিল বিশ্বজিৎ ও মমতার। দু’জনেরই জালাহাটি এলাকায় বাড়ি। বছর খানেক পর তাঁদের একটি ছেলে সন্তানও হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, তারপর থেকেই শ্বশুরবাড়ির কাছে পণের দাবি করতে থাকে জামাই বিশ্বজিৎ। মৃতার ভাই প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “কয়েকবার কয়েক হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে জামাইকে। কিন্তু কিছুদিন আগেই আবার তাঁতের ব্যবসা করবে বলে দিদির কাছ থেকে দশ হাজার টাকা চেয়ে পাঠায়। আমাদের কাছে এত টাকা ছিল না বলে দিতে পারিনি। যার জেরে দিদির উপর অত্যাচার করতে থাকে তারা।” তিনি আরও জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁদের জামাই বিশ্বজিতের সঙ্গে কথা বলে অশান্তি মিটিয়ে দেওয়ায় দিদির বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তাঁর আগেই আত্মঘাতী হন মমতা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালেও স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হয়। ছেলেকে কোলে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান মমতা। তারপরই কাটোয়া-ব্যান্ডেল আপ রেললাইনে দু’জনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে কালনা রেল পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.