অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে। ইতিমধ্যেই রাজবাড়ি কমপ্লেক্সে এক নিরাপত্তারক্ষীকে চরম হেনস্তা-সহ আধিকারিক ও কর্মীদের হুমকির ঘটনায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে পুরাতত্ত্ব বিভাগের কালনা থানায় এফআইআর দায়ের সহ তৃণমূল নেতৃত্ব তাকে জবাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। সেই ঘটনার জের কাটতে না কাটতেই ফের অশ্রাব্য ভাষা সহ হুমকি ফোনের আরও একটি অডিও ভাইরালকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় কালনায়। দলেরই এক নেতাকে উদ্দেশ্য করে পুরপ্রধানের হুমকির ঘটনায় বিতর্ক যে তুঙ্গে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। অডিওটি কালনা পুরসভার পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত ও কালনা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের নমঃশূদ্র সেলের সভাপতি তন্ময় দাসের কথোপকথন। অডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ওই অডিওটিতে সোশাল মিডিয়ায় লেখালিখি নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সাবমার্সিবল বসানো নিয়ে দুজনের মধ্যে বচসা ও একাধিক অশ্লীল শব্দই শুধু নয়, হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে। যদিও অডিওটি সত্য ও ২০২৩ সালের ঘটনা বলে দাবি তন্ময় দাসের। তন্ময় দাস জানান, “সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অডিওটি আমার সঙ্গেই হয়েছে। এটি সত্য। সাবমার্সিবল বসানো নিয়ে আমার সঙ্গে পুরপ্রধান আনন্দ দত্তর বচসা হয়। উনি বেআইনী জায়গায় সাবমার্সিবল বসাচ্ছিলেন। এটা বলাতে উনি আমাকে অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করছিলেন। আমি তৃণমূলের নমঃশূদ্র সেলের সভাপতি। ” তিনি আরও জানান, “শুধু আমার সঙ্গে নয়, সাধারণ মানুষকে প্রচুর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। দুর্ব্যবহার করেন। বছরখানেক আগে কীর্তন করতে আসা কয়েকজন পথচারী মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এমনকি মেরে নাকও ফাটিয়ে দেন। ”
এছাড়াও দশগুণ মিউটেশন ফি বাড়ানো, সময়ে পুরসভায় না আসা, নাগরিক পরিষেবা না দেওয়ার ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলে পুরপ্রধানকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। এই ঘটনার কথা তন্ময় দাস দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও জানান। যদিও পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে এই প্রথম তা কিন্তু নয়, এর আগেও দলের কয়েকজন কাউন্সিলর , কালনা শহর তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও পুরপ্রধানের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি রাজবাড়ি কমপ্লেক্সে নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় পুরপ্রধানকে দল যে সমর্থন করে না তা স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ। দেবপ্রসাদবাবু জানান, “একজন জনপ্রতিনিধির মুখের ভাষা বা আচরণ সবক্ষেত্রেই সংযত থাকা উচিত। কোনও জনপ্রতিনিধি যদি মনে করেন যে তার মুখের ভাষা বা আচরণটা ঠিক রাখতে পারবেন না তাহলে আমি তাকে অনুরোধ করব তিনি যে জায়গায় রয়েছেন সেখান থেকে পদত্যাগ করা উচিত। ” এবিষয়ে কালনা পুরপ্রধানকে ফোন করা হলেও ধরেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.