সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বিশ্বকাপ ফুটবল ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই টিভির পর্দায় চোখ ফুটবলপ্রেমীদের। পডুয়া থেকে শিক্ষক, অফিস কেরানি থেকে আধিকারিক, চৌকিদার থেকে পুলিশকর্তা, সকলেই এখন ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত। সেখানে শিল্পী মনই বা বাদ থাকে কেন! শিল্পীরাও মজেছেন দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ-এর উন্মদনায়। আর সেই ফুটবলপ্রীতি থেকেই উদ্ভব হয়েছে শিল্পের।
সামান্য একটা দেশলাই কাঠি। যা জ্বলে উঠলে তার স্পর্শে পুড়ে খাক হয়ে যেতে পারে অনেক কিছুই। আবার জ্বালানোর পর কাজ সেরে ফেলে দেওয়া হয় আধপোড়া কাঠি। যা কোনও কাজেই লাগে না। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবলের দামামা বাজতেই শিল্পী হাতে তুলে নিয়েছেন সেই সব দেশলাই কাঠি। আর শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সেই দেশলাই কাঠিই যেন হয়ে উঠেছে বাঙালির আবেগের ফুটবলের প্রতীক।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁসারি পাড়ার তরুণ শিল্পী অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় ফুটছেন তিনিও। ভারত বিশ্বকাপের ময়দানে না থাকলেও বাঙালির মন কিন্তু পড়ে রয়েছে রাশিয়াতেই। যার ব্যতিক্রম নন অরিজিৎবাবুও। তাই আপন খেয়ালে দেশলাই কাঠি দিয়েই বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত একটি বিশ্বকাপের রেপ্লিকা। যা কালনার অনেকেরই নজর কেড়েছে। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সামগ্রী দিয়ে শিল্পকর্ম গড়া নেশা অরিজিৎবাবুর। আবার পেশাও।
দেশলাই কাঠি দিয়ে বিশ্বকাপের রেপ্লিকা কেন বানালেন? অরিজিৎবাবুর কথায়, “একটা দেশলাই কাঠি অনেক বিপদ ঘটিয়ে দিতে পারে। আবার তা দিয়েই বিশ্বকাপের রেপ্লিকাও বানানো যায়। আমাদের দেশ হয়তো প্রতিযোগিতায় নেই। তাই বিশ্বকাপ আমাদের ঘরে আসার কোনও সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু এই নকল বিশ্বকাপই হয়তো ভবিষ্যতে কোনওদিন আসল হয়ে আমাদের দেশেও আসবে। সেই প্রত্যাশা থেকেই রেপ্লিকা বানানো।” অরিজিৎবাবু এর আগে গত দুর্গাপুজোর সময় এক টুকরো চক দিয়ে বানিয়েছিলেন দুর্গা প্রতিমা। বিশ্বকাপের রেপ্লিকা বানাতে একমাস পরিশ্রম করেছেন। একটি মাত্র দেশলাই কাঠি খোদাই করে বানিয়েছেন বিশ্বকাপের রেপ্লিকা।
কিছুদিন আগে কালনারই শিল্পী প্রসেনজিৎ দাস ডিমের খোল দিয়ে বিশ্বকাপের রেপ্লিকা বানিয়েছিলেন। যা প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কালনার শিল্পীরা যে বিশ্বকাপ উন্মাদনায় ফুটছেন তা আরও একবার প্রমাণ করলেন অরিজিৎবাবু।
ছবি: মোহন সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.