অরূপ বসাক, মালবাজার: রুদ্ররূপী কালিকা এখানে মৎস্যপ্রিয়। মালবাজার মহকুমার চালসার আনন্দময়ী কালীবাড়ি যেমন জাগ্রত, তেমনই তার ইতিহাসও চমকপ্রদ। চালসা পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ঘোরার জায়গা। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মা আনন্দময়ী কালীবাড়িতেও পুজো দেন তাঁরা। বহুদিন আগেই বলি প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই মন্দিরে। তবে ঐতিহ্য মেনে পুজোর দিন ৮ রকমের মাছ দিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়।
এবারেও এখানে নিয়মনিষ্ঠা-সহ কালীপুজো অনুষ্ঠিত হবে। পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। পুজোর দিন সকলের জন্য থাকে ভোগের ব্যবস্থাও। মন্দির সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এখানে মাটির প্রতিমা ও টিনের চালা দেওয়া মন্দিরেই পুজো হত। ১৯৮৭ সালে স্বর্গীয় সত্যনারায়ণ গুপ্তা ওঁর পিতা স্বর্গীয় রাম গুপ্তা ও মা স্বর্গীয় নিমবো দেবীর স্মরণে নতুন মন্দির স্থাপনের জন্য অর্থদান করেন। ওই বছরেই স্বর্গীয় হরেন্দ্র গোপাল দত্ত মন্দিরে মায়ের কষ্টি পাথরের মূর্তি স্থাপনের জন্য অর্থ সাহায্য করেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে স্বর্গীয় সমরেন্দ্র দে-সহ বেশ কয়েকজন অবদান রয়েছে। পরবর্তীতে কষ্টিপাথরের মায়ের মূর্তি ও মন্দির স্থাপন করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে এখানে বলি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়।
গত বছরে এই মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনাও ঘটে। মন্দিরের পুরোহিত চন্দন মুখোপাধ্য়ায় বলেন, ”গত বছর মায়ের মূর্তির গয়না সহ-দান বাক্সের টাকাপয়সাও চুরি হয়ে যায়। তার আগেও বেশ কয়েকবার চুরির ঘটনা ঘটেছিল মন্দিরে। গত বছরেই সকলের সহযোগিতায় ফের মায়ের নতুন গয়না সহ যাবতীয় সামগ্রী আনা হয়েছে। বর্তমানে মায়ের যাবতীয় গয়না রাখা হয় চালসার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। পুজোর সময় ব্যাঙ্ক থেকে পুলিশের নিরাপত্তায় সেই গয়না আবার মন্দিরে নিয়ে এসে মাকে পরানো হয়।”
চালসার মা আনন্দময়ী কালীবাড়ির সম্পাদক বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, ”কবে থেকে চালসা মা আনন্দময়ী কালীবাড়িটে কালীপুজো শুরু হয় তা সঠিকভাবে কারো জানা নেই। এখানে সারা বছরই নিয়ম নিষ্ঠা সহ মায়ের পূজো হয়। পুজোয় সকলের জন্য থাকবে ভোগের ব্যবস্থাও।” সারা বছরই মন্দিরের নানা ধরনের পুজো পার্বণের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। চালসা-সহ সংলগ্ন এলাকার জনগণ ও পর্যটকরাও মন্দিরে আসেন। বর্তমানে চালসার একটি অন্যতম ঐতিহ্য হল এই মন্দির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.