শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গেছো, মেছো, শাকচুন্নি, স্কন্দকাটা, আরও কত কী। ভাবছেন তো, আচমকা ভূতেদের তালিকা করতে বসলাম কেন? ভূত চতুর্দশী আসছে তো, এই শনিবার। আর তার প্রাক্কালে ‘জ্যান্ত ভূতে’র দাপাদাপিতে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজবাড়ি সংলগ্ন ইন্দিরা গান্ধী কলোনির ভগৎ সিং পাড়ায়। শনিবার ভূত চতুর্দশী। তার পরদিন নরক চতুর্দশী। সেই সঙ্গে দীপাবলি ও কালীপুজো। প্রতি বছর কালীপুজোর (Kali Puja) আগে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে ভূত চতুর্দশী হয়। আর তার আগে অদ্ভুতুড়ে কাণ্ড-কারখানা শুরু হয়েছে! রাতদুপুরে তাদের তাণ্ডবে হাড়হিম দশা ভগৎ সিং পাড়ার বাসিন্দাদের। ঘুম উড়েছে তাঁদের।
তবে এই ভূতেদের আসল কাহিনি যাঁরা জানেন, তাঁরা বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন ভূতুড়ে কাণ্ডকারখানা। কারণ, এ ভূত তো আসলে সে ভূত নয়। কালীপুজোকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছর ধরে জ্যান্ত ভূতের দেখা পাওয়া যাচ্ছে জলপাইগুড়ির ভগৎ সিং পাড়ায়। আর এখন তারই প্রশিক্ষণ (Training) চলছে নির্মীয়মান অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। বড়দের কাছ থেকে ভূত সাজার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে পাড়ার ছোটরা। মেছো, গেছো, পেত্নি, শাকচুন্নি, ব্রক্ষ্মদৈত্য, স্কন্দকাটা – কে নেই এদের দলে?
এসব ভূতেরা আবার স্কুলে পড়ে। কেউ অষ্টম, কেউ নবম, কেউ আবার দশম শ্রেণির ছাত্র। কালীপুজোয় জলপাইগুড়িবাসীকে ভূতের ভয় দেখাতে গত কয়েক বছর ধরে ভূত সাজার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে এলাকার কচিকাঁচারা। ছোটদের ভূত সাজিয়ে বড়দের ‘ভয় মহল’-এ টেনে এনে দু বছর আগে সাড়া ফেলে দিয়েছিল স্থানীয় ভগৎ সিং স্পোর্টিং ক্লাব। গত বছর তাদের তৈরি ‘ভূতুড়ে হাসপাতাল’ দর্শনার্থীদের প্রশংসা পায়। উদ্যোক্তাদের দাবি, খরচ কম। কিন্তু আকর্ষণ মারাত্মক। সেই কারণে কালীপুজোয় দর্শনার্থী টানতে ভূতের বিকল্প ভাবতেই পারছেন না তাঁরা।
এ বছর আরও একধাপ এগিয়ে তাঁরা তৈরি করছেন ‘ভূতুড়ে কুটির’। ভাঙা, পরিত্যক্ত সেই কুটিরে ঘুরে বেড়াবে পেত্নি, শাকচুন্নি, স্কন্দকাটার মতো ভূতের দল। পেত্নির মতো ভয়ানক ভূত সাজার দায়িত্ব পড়েছে স্থানীয় কিশোর মঙ্গলকুমার যাদবের কাঁধে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মঙ্গল। সে জানায়, গত বছর ও পেত্নি সেজেছিল সে। অন্ধকার পরিবেশে আচমকা পেত্নিকে দেখে দর্শনার্থীদের ভিরমি খাওয়া অবস্থা। যা দেখে মজা হলেও ‘হাসতে তাঁদের মানা’।
পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় সরকার জানান, ”ভয়ের সঙ্গে আনন্দ দিতেই এই আয়োজন। গত দুবছর বছর ধরে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছেন তারা। এবার ভূতগুলোকে আরও বেশি ভয়ানক করে তুলতে মেক আপের উপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন। অনলাইনে বুক করে আনানো হয়েছে ভয়ানক সব মুখোশ। কালীপুজোর পরদিন অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যা থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে যাবে ভূতুড়ে কুটিরের দরজা। তবে দুর্বল হৃদয়ের মানুষকে এই কুটিরে প্রবেশ না করার জন্য আগেভাগেই অনুরোধ জানিয়ে রেখেছেন উদ্যোক্তারা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.