শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ব্রিটিশকে বিদায় দিতে গোপনে উত্তরবঙ্গে আস্তানা গেড়েছিল বাংলা, বিহারের বিদ্রোহী সন্ন্যাসীরা। বণিকরাও নৌকা থেকে নেমে কুলিক নদীর পাড়ে ঘাটকালী পুজো করে তার পর মাটির বেদীতে পুজো দিতেন। সেই বেদীই এখনকার ‘শ্রী শ্রী করুণাময়ী কালীমাতা’। এবার ‘অভিভাবকহীন’ কালীবাড়ির পুজো সামলাবেন এলাকার বাসিন্দারা।
৫০০ বছর পুরনো রায়গঞ্জের আদি বন্দরে ‘শ্রী শ্রী করুণাময়ী কালীমাতা’র পুজোর সূচনা করেন এক নাগা সন্ন্যাসী। তবে জমিদার রঘুনন্দ গিরি গোঁসাইয়ের তত্ত্বাবধানে বন্দরে গড়ে ওঠে কালীমন্দির। তারাপীঠের তন্ত্রসাধক জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় এখানকার প্রথম পুরোহিত ছিলেন। পরবর্তীতে যোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দায়িত্ব নেন। বংশপরম্পরায় দায়িত্ব পান নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। ব্রিটিশ বিদায়ের পর মদনমোহন চট্টোপাধ্যায় থেকে তাঁর পুত্র পিন্টুবাবু। তাঁর ভাই মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন মন্দিরের পুজো করতেন। কিন্তু চলতি বছরে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর অকাল মৃত্যুতে প্রাচীন কালীমন্দির পরিচালনা কার্যত অভিভাবকহীন। তাই এই প্রথম স্থানীয় বাসিন্দারাই আদি কালীবাড়ির পুজোর আয়োজনে শামিল হয়েছেন। তাঁরাই সামলাবেন সমস্ত দায়িত্ব।
ঐতিহ্য মেনে তান্ত্রিক মতে, কালীপুজোয় ছাগ বলি এবার হবে না। গিরি গোঁসাইয়ের ষষ্ঠ পুরুষ কমলেশ গোস্বামী বলেন,”এই বন্দর দেবদেবীর পীঠস্থান। কালীর পাঁচবোনের মধ্যে ঘাটকালী, বুড়িকালী আর আদি করুণাময়ী কালীপুজো এই বন্দরেই হয়। আসলে বন্দরের মন্দির ঘিরেই রায়গঞ্জের উৎপত্তি। আজকের বৃহৎ রায়গঞ্জ শহরের উৎসভূমি এই আদি কালীবাড়ি।” তবে মন্দির পরিবারের বংশধরদের শেষ পুরোহিতের মৃত্যুতে এবার সেই বীরভুম থেকে পুরোহিত বন্দর কালীপুজো করবেন বলে জানান প্রয়াত পুরোহিত মদনমোহনের স্ত্রী চিত্রা চট্টোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.