রাজা দাস, বালুরঘাট: স্বপ্নাদেশের কারণে গড়া হয়নি মন্দির। খোলা আকাশের নিচেই বছরের পর বছর চলছে শ্যামা মায়ের আরাধনা। পুজোর পর প্রতিমা মাটিতে মিলিয়ে যাওয়াটাই এখানকার রীতি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডির আমিনপুরের ঐতিহ্যবাহী এই কালীই মাটিয়া কালী নামে পরিচিত।
জানা গিয়েছে, দীপান্বিতা অমাবস্যায় পূজিতা হয় এই কালী। কথিত আছে, ব্রিটিশ শাসনকালের পূর্বে অবিভক্ত ভারতে জমিদার যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরীর উদ্যোগে এখানে শুরু হয় কালীপুজো। স্বপ্নাদেশের কারণেই এখানে কোনও মন্দির করা হয়নি। প্রথম থেকেই কালী পুজো হয় খোলা আকাশের নিচে, মাটির থানে। সেই কারণে জমিদার বংশের সকলেই মাটিতে ঘুমোতেন। ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় রটন্তী কালী নামে মায়ের পুজো করে জয়লাভ করেছিল জমিদার বংশ। এই রটন্তী কালীই এলাকাবাসীর কাছে মাটিয়া কালী নামে পুজিতা হচ্ছে পরবর্তীতে।
মাটিয়া কালীর থানের ঈশান কোণে রয়েছে একটি ঘর। যেখানে এক সময় এই কালীর সাজগোজের গয়না রাখা হত। তার পাশেই রয়েছে পঞ্চমুখী শিবমন্দির। লোকমুখে প্রচলিত এই পাঁচ মাথা শিবমন্দিরটিও ২২০ বছরের বেশি পুরনো। স্থানীয়রা তো বটেই, দূরদুরান্ত থেকে দর্শনাথীরা আসেন আমিনপুরের মাটিয়া কালী ও শিবমন্দির দর্শনে। এবারও মাটিয়া কালীর পুজো নিয়ে শুরু হয়েছে জোর প্রস্তুতি। স্থানীয় বাসিন্দা জীবন রায় বলেন, “যে কোনও শুভ কাজ শুরু করার আগেই মায়ের পুজো দেয় গ্রামবাসীরা। যেকোনও ইচ্ছে পূরণে মা মাটিয়া কালীর থানের মাটি তুলে খাওয়ার প্রচলনও রয়েছে এলাকায়।” দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের পুজোর সময় দূরদূরান্ত থেকে হয় ভক্তের সমাগম হয়। চলে মেলা। পুজোর পর প্রতিমা মাটিতে মিলিয়ে যাওয়ার কারণে এই কালী মাটিয়া কালি বলে খ্যাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.