দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: খোকা ইলিশ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার আগেই লুঠ। কার্যত ‘হরির লুট’ চলল কাকদ্বীপে। একটা দুটো নয়, ১২০০ টন খোকা ইলিশ। মৎস্যজীবীরা সাতটি গাড়িতে করে সেই খোকা ইলিশ পুঁতে দেওয়ার জন্য নিয়ে আসেন। তবে পোঁতার আগেই একপ্রকার ‘হরির লুট’ হয়ে গেল। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপ মৎস্যবন্দর লাগোয়া হারউড পয়েন্ট থানার কাছে।
পুলিশ ও মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর, ফ্রেজারগঞ্জ থেকে সাতটি লরি করে প্রায় ১২০০ টন খোকা ইলিশ আনা হচ্ছিল কাকদ্বীপ বাজারে। কিন্তু মৎস্য দপ্তর গোপনসূত্রে খবর পেয়ে ইলিশ ভরতি লরি আটকে দেয়। রাতে আটক লরিগুলি থেকে এদিন সকালে প্রায় ১২০০ টন ইলিশ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। আট নম্বর লটের কাছের একটি ফাঁকা জমিতে লরিগুলিকে সার বেঁধে রাখা হয়। লরি থেকে ইলিশ নামিয়ে মাটিতে পোঁতার তোড়জোড় শুরু হতেই ঘটে বিপত্তি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ইলিশ পোঁতার খবর রটে যায়। স্থানীয়রা বড়বড় ব্যাগ হাতে করে ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশের বাধার তোয়াক্কা না করে যে যতটা পারে খোকা ইলিশ ব্যাগে করে নিয়ে ছুটতে শুরু করে। বস্তুত, ছোট হোক বা বড়, বিনা খরচে ইলিশে রসনা তৃপ্তির এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি অনেকেই।
এমন ঘটনায় বিস্মিত পুলিশ ও মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরা। আধিকারিকদের বক্তব্য, একেকটি ইলিশের গড় ওজন ১৫০ থেকে ২৫০ গ্রাম। ৫০০ গ্রাম ওজনের কম ইলিশ ধরা বেআইনি। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দিয়ে উপকূল এলাকা থেকে মাঝেমধ্যেই খোকা ইলিশ ধরা হয়। প্রায় ১২০০ টন খোকা ইলিশ ধরা হয়েছে। গোপনসূত্রে এমন খবর পেয়েই ওই সাতটি লরিকে আটক করা হয়। কিন্তু মাটিতে পুঁতে দেওয়ার আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের লুটের ঘটনায় গোটা উদ্যোগটাই কার্যত ভেস্তে যায়। তবে সব ইলিশ লুট হয়নি বলেই মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর। আপাতত ইলিশ পোঁতার কাজ থমকে গিয়েছে। আরও বেশি পুলিশকর্মী এনে সেই কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে খবর।
এই প্রসঙ্গে মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সৌমজিৎ দাস বলেন, ‘খোকা ইলিশ ধরা বেআইনি। এমন ঘটনা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেবে দপ্তর। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এই ঘটনা রুখতে মনিটরিং কমিটি গড়া হচ্ছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ছাড়াও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে যুক্ত করা হবে। ইলিশের ফলন বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও চলবে এমন অভিযান।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.