Advertisement
Advertisement

Breaking News

Birbhum

‘এক চালেই কিস্তিমাত করে দেব’, অনুব্রত ফেরার পর ‘শিষ্য’ কাজলের নিশানায় কেরিম

'যদি কেউ মনে করেন পাঙ্গা নেব, আমি চুড়ি পরে বসে নেই', দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসলে অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের বার্তা কাজল শেখের।

Kajal Sheikh trains gun at Anubrata Mondal's aide
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 26, 2024 8:42 pm
  • Updated:September 26, 2024 8:45 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: একসময়ে ছিলেন অনুব্রত বিরোধী। কালক্রমে তিনিই পরে হয়ে ওঠেন ‘শিষ্য’। তাঁকে ‘গুরু’ বলে মানতে শুরু করেন কাজল শেখ। বর্তমানে তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি। গরু পাচার মামলায় জামিন পেয়ে ২ বছর পর নিজের গড়ে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। সেদিন থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মানুষজন অনুব্রতর সঙ্গে ঘন ঘন দেখা করেছেন, কথা বলছেন, সময় কাটাচ্ছেন। অথচ এখনও পর্যন্ত কাজল শেখের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। তবে নিজের ‘সাজানো বাগানে’ একফোঁটা আঁচড় যাতে না পড়ে, তার জন্য সতর্ক কাজল। এবার অনুব্রত ঘনিষ্ঠ কেরিম শেখের নাম না করেই হুঁশিয়ারি দিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। বললেন, ”যদি কেউ মনে করেন পাঙ্গা নেব, আমি চুড়ি পরে বসে নেই। দাবা থেকে হাডুডু – সব খেলাই খেলতে জানি। এক চালেই কিস্তিমাত করে দেব।’’

তিহার থেকে ছাড়া পেয়ে জেলায় এলেও কাজল শেখের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের দেখা হয়নি। বুধবার দলীয় দপ্তরে এসে অনুব্রতবাবু নিজে ফোন করে কাজল শেখকে আসার আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু নানুরে দলীয় কর্মসূচি থাকায় তিনি দেখা করতে পারেননি। এদিন কাজল বলেন, ‘‘কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে যেতে হয় না। সময় পেলেই দাদার সঙ্গে দেখা করে আসব। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্যই সামনে যেতে পারছি না। তবে দিল্লি থেকে, বোলপুর থেকে বহুবার গুরুর সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ তবে নানুরের থুপসরার দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সামনে কাজলের গলায় অন্য সুর। তিনি বলেন, ‘‘আমি বালির পার্সেন্টেজ খেতে আসিনি। দলটা ভালোবেসে করি। যদি কেউ মনে করেন পাঙ্গা নেব, আমি চুড়ি পরে বসে নেই। দাবা থেকে হাডুডু – সব খেলাই খেলতে জানি। একচালেই কিস্তিমাত করে দেব।’’ নানুরে তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কেরিম খান ও গদাধর হাজরা যে কাজলের টার্গেট, এদিনের হুমকি থেকেই তা স্পষ্ট।

Advertisement

অনুব্রত জেলবন্দি হতেই কার্যত জেলা কমিটি থেকে একরকম ব্রাত্য হয়ে যান কেরিম-গদাধর। কিন্তু কেরিম খুঁটি ছাড়েননি। দিল্লিতে অনুব্রত তথা কেষ্টদার দুর্দিনে তিনি ও জেলার কয়েকজন হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন। জেলায় তাই অনুব্রত মণ্ডল ফিরতেই ফের অক্সিজেন পেয়েছে অনুব্রত অনুগামীরা। বুধবারই একটি ভাইরাল অডিওতে কেরিমের এক অনুগামীকে কাজলের মতো গলায় হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে। কাজল বলেন, ‘‘দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি লেগেছে, ভালো কথা। তিল তিল করে জেলায় সংগঠন করেছেন তিনি। তা বলে কোর কমিটির সদস্যদের ছবি সরানো ঠিক হয়নি। সেই ছবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকি কেষ্টদার ছবিও ছিল। ওই কোর কমিটি স্বয়ং গড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

আসলে অনুব্রত মণ্ডলের জেল মুক্তির পরে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন তৃণমূলের জেলার নেতারা। প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী একবারও কেষ্টর নাম উচ্চারণ করেনি। বরং জেলা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজল শেখকে বেশ কিছু দায়িত্ব দিয়ে যান। পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্ব অনুব্রতকে জেলা সভাপতি রেখেই ক্ষমতা কোর কমিটির হাতে রেখে দেন। কারণ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রত মণ্ডলের জেলবন্দি অবস্থায় তারই তৈরি সাংগঠনিক পরিকাঠামোয় নির্বাচন করে সাফল্য এসেছে তৃণমূলের। তাছাড়া অনুব্রত এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নন। এই মুহূর্তে অনুব্রত অনুগামীরা সক্রিয় হলেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের কাঠামো খারাপ হতে পারে। তাই থুপসরায় দলীয় কর্মীদের কাজল বলেন, ‘‘আমরা একটাই দল করি তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের স্বার্থে নয়, মানুষের স্বার্থে দলটা গড়েছেন। কিন্তু কিছু মানুষ বলে বেড়াচ্ছেন থুপসরা কার্যালয় তারা নাকি পুনরুদ্ধার করেছেন। আমি এখন ছেড়ে রেখেছি। যেদিন গোটাতে শুরু করব, গুটিয়ে দেব। আমি নেতা সাজতে আসিনি। অনেক ঘাটের জল পেটে আছে। আমি আগেই বুঝতে পেরেছিলাম, অনেকে পাঁচিলে চেপে বসে আছে। তাই দাবার চাল চেলে বসে আছি।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement