সুমিত বিশ্বাস, ঝালদা(পুরুলিয়া): বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি আবার রাজ্যের বিজেপির পর্যবেক্ষকও বটে। শুক্রবার পুরুলিয়ার ঝালদায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেখানকার সভা থেকে পুলিশ আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন,“বিজেপির বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানো আধিকারিকদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে ওই আধিকারিকদের ‘মুরগা’ বানানো হবে।” একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “বিজেপির ওপর নির্যাতন চলবে আর আমাদের নেতা–কর্মীরা চুড়ি পরে বসে থাকবে, তা হবে না। ইট সে ইট বাজা দেঙ্গে।” পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা CAA নিয়েও তৃণমূলকে বেঁধেন তিনি।
সেইসঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “যারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্থান থেকে ধর্মীয় ভাবে প্রতারিত হয়ে এদেশে আসছেন তাঁরা আমাদের অতিথি। তাঁদেরকে নাগরিকত্ব দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। কারণ, ভারত ছাড়া আর হিন্দু দেশ কোথায়?” তাঁর কথায়, “২০২১ এ রাজ্যে বিজেপি আসবে। কেউ রুখতে পারবে না।” তারপরেই ‘শোলে’ সিনেমার একটি ডায়লগের ঢঙে হাত মুঠো করে সেই পুলিশ আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর টিপ্পনি, “অব তেরা কেয়া হোগা রে?”
এদিনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মিছিল ও পথ সভায় ছিলেন বিজেপির চার সাংসদ পুরুলিয়ার জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বাঁকুড়ার সুভাষ সরকার, ঝাড়গ্রামের কুনার হেমব্রম ও ব্যারাকপুরের অর্জুন সিং। গত ৬ জানুয়ারি ঝালদা পুর শহরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির অনুমতিহীন মিছিল তথা অভিনন্দন যাত্রার প্রায় শেষ দিকে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তখনই বিজেপি–পুলিশ খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। লাঠি চালায় পুলিশ। বিজেপির একাধিক কর্মী জখম হন। আইসি-র মাথাও ফাটে। এই ঘটনায় পুরুলিয়ার সাংসদ সহ মোট ৩০০ জনের নামে মামলা হয়। গ্রেপ্তার হন ছ’জন।তারই প্রতিবাদে এদিন বিকালে ঝালদা পুর শহরের মেরি আপকার ময়দান থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে বিজেপি। প্রায় দু’কিমি পদযাত্রা করে বিরসা মোড় এলাকার হাটতলায় মিছিল শেষে পথ সভা হয়।
সেই সভা থেকে কৈলাস বিজবর্গীয় বলেন, “দলিত, পীড়িত, শোষিতদের নাগরিকত্ব দিতে চাইছেন মোদিজি। কিন্তু দিদি তার বিরোধিতা করছেন। কারণ, তাঁর ভোট ব্যাঙ্ক ভেঙে যাবে।” এদিন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেন বিজেপি নেতারা। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং পুলিশ ও শাসক দলকে আক্রমণ করে বলেন, “একজন বিজেপি নেতাকে মারলে দশজন বিজেপি নেতা জন্ম নেবেন। যত মারবে ততই আমরা বদলা নেওয়ার জন্য তৈরি থাকব।” এদিন বিজেপি ডিজে বাজিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করায় বিতর্কে জড়ায়। এদিন এই কর্মসূচিতে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.