স্টাফ রিপোর্টার: পিকে লোক পাঠিয়ে ক্ষোভের কথা জানতে চাইলেও বরফ গলল না। উলটে নিজের ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা আবারও জানিয়ে দলকে দুষলেন বারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত (Shilbhadra Dutta)। বলে দিলেন, “পিকের দল এসেছিল। আমার সিদ্ধান্তের কারণ জানতে। তবে এর থেকে দল লোক পাঠালে ভাল করত।”
পুজোর মরশুমের শুরু থেকেই বেসুরে কথা বলছিলেন শীলভদ্র। ফেসবুকে লিখেছিলেন মুক্তির কথা। তাঁর ব্যাখ্যায় যদিও বলেছিলেন, করোনা থেকে মুক্তির কথা। এর মাঝেই সামনে এসেছে নানা জল্পনা। শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari) নতুন কিছু করতে পারেন তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী পদত্যাগের পথে যান। শুভেন্দু রাজ্য মন্ত্রিসভা ত্যাগ করেন। এর মাঝেই শীলভদ্রও পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি আর ভোটে দাঁড়াবেন না। বেসুরো কথা বলেন শিবপুরের তৃণমূল বিধায়ক বর্ষীয়ান জটু লাহিড়ীও। আগেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এভাবে একে একে বহু দলবিরোধী আওয়াজ ওঠার মধ্যেই দলের তরফ থেকে পিকের দায়িত্বপ্রাপ্তরা পরিস্থিতি বুঝতে শুরু করেন এবং উদ্যোগী হন।
সূত্রের খবর, এর আগেই দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার একাধিক বিধায়কের উপর নজরদারি চালিয়েছে এই পিকের দল। গত কয়েকমাস ধরেই অনেকের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছিল। তার ভিত্তিতেই পিকের দল খোঁজখবর করতে শুরু করে। উত্তরে মিহির, দক্ষিণে শীলভদ্রকে নিয়েও খোঁজখবর চালিয়েছিল তৃণমূলের ভোটকুশলীর শিবির। তা নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে উষ্মাও চেপে রাখেননি শীলভদ্র। এদিনও বুঝিয়ে দেন দলের প্রতি তাঁর ক্ষোভ রয়েছে। তবে তা জানতে বা বুঝতে দলের কেউ যোগাযোগ করলেই তিনি খুশি হতেন বলে জানিয়েছেন।
এরপরই রাতে খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mullick) যান শীলভদ্রর বাড়ি। তিনি গিয়ে শোনেন, বিধায়ক বাড়িতে নেই। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও বেশি রাত পর্যন্ত দু’জনের দেখা না হলেও খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, “আমাদের সম্পর্ক ভাল। কথা বললেই সমস্যা মিটবে।” অবশ্য দলের একটি অংশের বক্তব্য, যে সব বিধায়কের মুখে বেসুরো কথা শোনা যাচ্ছে তাঁদের এলাকায় লোকসভায় ফল খারাপ হয়েছে। বিজেপির কাছে এই বিধানসভাগুলিতে তৃণমূল পিছিয়ে। আগামী ভোটে ভাল ফল হবে না ভেবেই এই বিধায়করা বেসুরো কথা বলছেন বলে মত দলের একাংশের। এসবের মাঝে বুধবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেন শীলভদ্র দত্ত। লেখেন বন্ধু দেখা হবে। কেন এমন পোস্ট ? এবিষয়ে বিধায়ক বলেন, “আমার যত বন্ধু আছে তাঁদের সঙ্গে অনেকদিন দেখা হয় না। তাই তাঁদের উদ্দেশ্যে আমার এই পোস্ট। সবার ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। কিন্তু ফেসবুকে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। তাই পথে চলতে চলতে তাঁদের সঙ্গে হয়তো কখনও দেখা হয়ে যাবে। তবে এই পোষ্টের অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। কবি সুকান্তের মত শুধু একটা লাইন লিখে দিয়েছি। রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই এর সঙ্গে। আগেই বলেছি ভোটে দাঁড়াব না। আমায় কেউ কোনও প্রস্তাব দেয়নি। বিজেপিও নয়। সেই প্রস্তাব পেলেও গ্রহণ করবো না”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.