অঙ্কন: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: মাসখানেকের লকডাউন। দীর্ঘদিন বাড়ি যেতে পারেননি ঝাড়গ্রাম পুলিশ লাইনের জুনিয়র কনস্টেবল। তারপর হিন্দুদের একত্রিত হওয়ার মতো বিস্ফোরক পোস্ট ফেসবুকে। মানসিক অস্থিরতার কথা বোঝা যাচ্ছিল। আজ দুপুরে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে চরম আতঙ্ক তৈরি করলেন ওই পুলিশকর্মী। পুলিশ লাইনের একটি বাড়ির ছাদে উঠে সে ব্যারাক লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। কতজন আহত হয়েছেন, সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছেন ঝাড়গ্রামের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক এবং আইসি। সূত্রের খবর, ওই জুনিয়র কনস্টেবলকে ছাদ থেকে এখনও নামানো যায়নি। ফলে আতঙ্কের রেশ কাটছে না কিছুতেই। ঘটনার জেরে পুলিশ লাইনের রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ আচমকাই নিজের এসএলআর নিয়ে পুলিশ লাইনের ৪ নং পোস্ট থেকে ২ নং পোস্টে চলে আসেন বিনোদ কুমার নামে এক জুনিয়র কনস্টেবল। এরপর তিনি একটি বাড়ির ছাদে উঠে ব্যারাক লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকেন। ১৫-২০ রাউন্ড গুলি চলে বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। গুলির শব্দে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায়। ঘটনাস্থলে যান ঝাড়গ্রামের এসডিপিও এবং আইসি। ব্যারাকের পাশেই রাস্তা। সেখানে এই মুহূর্তে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু ওই কনস্টেবলের কীর্তিতে নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রেখে গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, বিনোদ কুমারের কাছে অন্তত ১৮০ রাউন্ড গুলি রয়েছে। এবং মাঝেমধ্যেই তিনি গুলি চালাচ্ছেন। পুলিশ লাইনের বাইরে থেকেও শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ।
দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরও হামলাকারী বিনোদ কুমারকে ওই বাড়ির ছাদ থেকে নামানো সম্ভব হয়নি। সে কারণে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে তাঁর গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছিল। তবে বিকেলের দিকে আকাশ মেঘলা হয়ে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে ড্রোনের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এই এলাকাটি শালগাছ দিয়ে ঘেরা, অন্ধকারাচ্ছন্ন। সন্ধে নামলে হামলাকারীকের খুঁজে বের করে তাঁকে নিচে নামিয়ে আনা মুশকিল হবে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। ফলে বাড়ছে আতঙ্ক। চিন্তিত পুলিশ প্রশাসনও।
হামলাকারী জুনিয়র কনস্টেবলের সহকর্মীদের ধারণা, অনেকদিন ধরে বিনোদ কুমার বাড়ি যেতে পারেননি। সেই কারণে অবসাদগ্রস্ত হয়ে ছিলেন। সে কারণেই হয়ত এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে সম্প্রতি তার একটি ফেসবুক পোস্টের বার্তা ঘিরেও নানা জল্পনা তৈরি হচ্ছে। সেই পোস্টে তিনি হিন্দুদের এক হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। তাহলে কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ?উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
ছবি: প্রতীম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.