সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দু’মাস ধরে বেতন মেলেনি। তাই প্রতীকী কর্মবিরতিতে গেলেন গাড়িচালকরা। ফলে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারপতিদের কর্মস্থলে যেতে হল পায়ে হেঁটে। বৃহস্পতিবার সকালে এই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল দুর্গাপুর। যদিও পরে একমাসের বেতন মিটিয়ে দেওয়ায় এদিন বিকেল থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন গাড়িচালকরা৷
যাঁরা অভিযুক্তদের বিচার করেন, তাঁরাই ‘বিচার’ না পেয়ে আদালতে এলেন পদব্রজে। বৃহস্পতিবার সকালে এই দৃশ্যে অবাক বিচারপ্রার্থীরাও। দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারপতিদের আবাসন থেকে যাতায়াতের জন্য মোট ৩টি গাড়ি বরাদ্দ আছে। তিনজন চালকও রয়েছেন। চুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া নেওয়া এই গাড়ির চালকরা গত দু মাস ধরে তাঁদের বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ৷ মাসে ৬০০০ টাকা তাঁদের বেতন৷ আর তা দু’মাস ধরে না পেয়ে এবার প্রতিবাদে শামিল গাড়িচালকরা৷ তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদারের কাছ থেকে বেতনের বদলে মিলছে গালভরা প্রতিশ্রুতি। বেতনের দিন বলে দিয়েই খালাস ঠিকাদার। কিন্তু সেই দিনেও হাতে আসে না মাস মাইনে। তাই বাধ্য হয়ে বুধবার বিকাল থেকে কর্মবরতি শুরু করেন চালকরা।
ওইদিন সন্ধেবেলা দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের ১১ জন বিচারপতি গাড়ি না পেয়ে বাধ্য হয়ে বৃষ্টি মাথায় পায়ে হেঁটেই আবাসনে ফেরেন। বৃহস্পতিবারও একই কারণে বিচারপতিদের সিটি সেন্টারের আবাসন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটেই পৌঁছলেন আদালতে৷ কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া গাড়ির চালক গৌরাঙ্গ করের কথায়, ‘‘দু’মাস ধরে ‘আজ মাইনে হবে, কাল মাইনে হবে’ বলে আশ্বাস দিচ্ছেন ঠিকাদার। কিন্তু মাইনে আর হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছি আমরা। বাধ্য হয়েই কর্মবিরতিতে নেমেছি৷’’ আরেক চালক অসিতবরণ মালও একই অভিযোগ করেছেন গাড়ির ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
আর সমস্ত অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই গাড়ির ঠিকাদার চঞ্চল গোস্বামীর পালটা বক্তব্য, ‘মাইনে পেতে দেরি হওয়াতেই সাময়িক সমস্যা হয়েছিল তাঁদের। সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার বিকেলেই গাড়িচালকদের একমাসের বেতন পেয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা৷ ফলে ফেরার সময় আর হেঁটে ফিরতে হয়নি বিচারপতিদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.