শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: মেয়ের চাকরির জন্য দেব-ঘনিষ্ঠ রামপদ মান্নাকে এজেন্ট মারফত টাকা দিয়ে ফেরত পেলেন গঙ্গেশ সাঁতরা। তিনি প্রায় দুই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ক্ষীরপাই পুরসভার ওই বাসিন্দা। টাকা ফেরত বা চাকরি, কোনওটাই না হওয়ায় পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন গঙ্গেশ সাঁতরা নামে ওই ব্যক্তি। মঙ্গলবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ তা প্রকাশিতও হয়। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে। এমনকী অস্বস্তিতে পড়েন স্বয়ং তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবও।
দেব জানান, যতক্ষণ না দোষ প্রমাণিত হয় ততক্ষণ আমি রামের পাশে। এই ঘটনা সত্য হলে শাস্তি পেতে হবে রামকে। এমনকী ওই ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, চন্দ্রকোনা থানা তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলে তিনি ই-মেল মারফত জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপারও কোনও সাড়া না দেওয়ায় গঙ্গেশবাবু কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হতেই তিনি যে এজেন্টের মাধ্যমে টাকা দিয়েছিলেন সেই ব্যক্তি বুধবার সন্ধ্যায় গঙ্গেশবাবুর বাড়িতে গিয়ে ওই টাকা ফেরত দিয়ে আসেন বলে জানা গিয়েছে।
গঙ্গেশবাবু বলেন , “বুধবার সন্ধ্যায় সত্যরঞ্জন ঘোষ নামে ওই এজেন্ট আমার দেওয়া এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গিয়েছেন।” জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে মে মাসে বড় মেয়ে মৌসুমী হাজরার আশাকর্মীর চাকরির জন্য দফায় দফায় এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন গঙ্গেশবাবু। ওই টাকা দিয়েছিলেন চন্দ্রকোনার শালঝাটি গ্রামের বাসিন্দা সত্যরঞ্জন ঘোষকে।
গঙ্গেশবাবুর অভিযোগ, সত্যরঞ্জনবাবু সাংসদ দেব-ঘনিষ্ঠ রামপদ মান্নার এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। তাই তিনি তাঁকেই টাকাটা দিয়েছিলেন । গঙ্গেশবাবু বলেন, “২০২২ সালে আমার বড় মেয়ে মৌসুমী হাজরা আশাকর্মীর চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছিল। যাতে চাকরিটা হয় তাই আমি সত্যরঞ্জনবাবুকে দফায় দফায় মোট এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। সেটা ২০২২ সালের ১১ মে-তে। আমি নিজে রামপদবাবুর সঙ্গে দেখাও করেছিলাম । তিনি প্রথমে তিন লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। পরে তা ২ লক্ষ টাকায় রফা হয়। কিন্তু মেয়ের চাকরিটা হয়নি। তাই আমি টাকা ফেরত চেয়েছিলাম। বারবার টাকা চেয়েও না পেয়ে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। আমি ই-মেল করে পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি । গোটা বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় । তারপরই বুধবার সন্ধ্যায় সত্যরঞ্জন ঘোষ নিজে এসে আমার দেওয়া এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গিয়েছেন । সংবাদ মাধ্যমকে অশেষ ধন্যবাদ।”
যদিও এবিষয়ে সত্যরঞ্জনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পেশায় কাঠমিস্ত্রী গঙ্গেশবাবুর বাড়ি ক্ষীরপাই পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের তেলিবাজার এলাকায়। টাকা ফেরত বা চাকরি কোনওটাই না পেয়ে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি ও তাঁর পরিবার। যদিও প্রথম থেকে গঙ্গেশবাবুকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন দেব-ঘনিষ্ঠ তথা সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না । তিনি বলেন , আমি আজও বলছি গঙ্গেশ সাঁতরা নামে কোনও ব্যক্তিকে চিনি না । টাকা নেওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা নিলে তা আমার দায় নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.