সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২ দিন ধরে সৌভিককে জেরার পরও এখন কিনারা মিলল না জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের। তবে ক্রমাগত জেরায় তদন্তকারীদের কাছে অনেকটাই স্পষ্ট অভিযুক্ত সৌভিকের অবস্থান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌভিকের পেশাই ছিল সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। পরে হুমকি দিয়ে তাঁদের থেকে মোটা টাকা আদায়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বিউটির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সৌভিকের। এরপর হুমকি দিয়ে টাকা নিতে শুরু করে সৌভিক। বাধ্য হয়েই টাকা দিচ্ছিলেন শিক্ষক। সেই কারণেই বাজারে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন বন্ধুপ্রকাশ পাল। তদন্তের স্বার্থে মৃতের ভাই ও স্বপন নামে এক গাড়িচালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের কানাইগঞ্জ লেবুবাগানের বাসিন্দা ছিলেন পেশায় শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল। স্ত্রী বিউটি ও ছ’বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি। দশমীর দুপুরে ঘর থেকেই তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় তদন্তে নামে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে খুনের পিছনে আর্থিক লেনদেন, পারিবারিক কলহ বা সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকতে পারে বলে অনুমান করেন তদন্তকারীরা। প্রথমেই উঠে আসে সৌভিক বণিক নামে এক যুবকের নাম। তল্লাশির পর শুক্রবার রাতে তাকে আটক করে পুলিশ। এরপর বন্ধুপ্রকাশ পালের বাবা ও ভাইকেও আটক করা হয়। শুক্রবার রাতভোর জেরা করা হয় সৌভিক ও মৃতের বাবা অমর পালকে। শনিবার রাতেও চলে জিজ্ঞাসাবাদ। দীর্ঘ জেরার পর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে সৌভিকের বড়সড় ভূমিকা থাকার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। উঠে আসছে সৌভিক-বিউটি সম্পর্কের তত্ত্বও। তবে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে কে বা কারা সৌভিককে সাহায্য করেছিল তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। সেই সঙ্গে অমর পালের যোগসাজোশের বিষয়টিও উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
বন্ধুপ্রকাশ ছোট থাকতেই বাবা অমর পাল দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। সেই থেকে মায়ের সঙ্গে সাগরদিঘিতে থাকতে শুরু করেন বন্ধুপ্রকাশ। বাবা অমরপাল থাকতেন রামপুরহাটে। কিন্তু ছেলে বড় হতেই, বাবা-ছেলের মধ্যে অশান্তি শুরু হয় সম্পত্তি নিয়ে। সেই অশান্তি আদালত পর্যন্তও গড়ায়। ফলে সেই সম্পত্তিগত বিবাদের জেরেও শিক্ষকের পরিবার খুন হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করে পুলিশ। অতিদ্রুতই সত্য উদঘাটনের চেষ্টায় তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.