নন্দন দত্ত, সিউড়িঃ ম্যাসাঞ্জোর কার? এনিয়ে আর দুই রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে লড়াই নয়, এবার বিষয়টি দুই সরকারের ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ হয়ে দাঁড়াল। রবিবার ম্যাসাঞ্জোর জলাধারে দাঁড়িয়ে দুমকার বিধায়ক তথা ঝাড়খন্ডের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী লুইস মাড়ান্ডি বললেন, “শুধুমাত্র জলাধারের বাইরে আর কোথাও বাংলার সরকারের স্টিকার লাগাতে দেব না। এটা এলাকার মানুষের আবেগের প্রশ্ন। তাও কেউ যদি এদিকে নজর বাড়ায় তার চোখ তুলে নেওয়া হবে।” তার প্রত্যুত্তরে বাংলার সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “এটা মগের মুলুক নাকি! আমাদের বিশ্ববাংলার লোগো গা জোয়ারি করে ঢেকে দেবে। এটা চলতে দেওয়া যাবে না।”
শুরু হয়েছিল রং রাজনীতি নিয়ে। ঝাড়খন্ডে অবস্থিত ময়ূরাক্ষী নদীর ওপর জলাধারের নীল সাদা রংকে ঘিরে। সেটাই ক্রমে তৃণমুল বিদ্বেষে পরিণত হল। তাই শুধু অসম নয়, এবার প্রতিবেশি রাজ্য ঝাড়খন্ডও তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ে নামল। দু’দিন আগেই ম্যাসাঞ্জোরে ওয়েলকাম বোর্ডে থাকা বিশ্ব বাংলার লোগো ঢেকে দেওয়া হয় ঝাড়খন্ডের লোগো দিয়ে। এমনকি ওয়েলকাম বোর্ডে ওয়েষ্ট বেঙ্গলের ওপর আটকে দেওয়া হয় ঝাড়খন্ডের নাম। সে নিয়ে রাজ্যের নির্দেশে বীরভূম জেলাশাসক দুমকার ডিসিকে অভিযোগ করেন। সেচ দপ্তর ম্যাসাঞ্জোর থানায় এফআইআর করে। কিন্তু রবিবার সকালে রাস্তার দু’প্রান্তে থাকা দুটি বোর্ডের একটিতে ঝাড়খন্ডের স্টিকার ও ঝাড়খন্ডের নাম খুলে দিতে দেখা যায়।
তারই প্রতিবাদে রবিবার সকালে বিজেপির রানিশ্বর এলাকার সমর্থকেরা বাইক ব়্যালি করে বিক্ষোভ দেখায় । রানিশ্বরের বিজেপি নেতা রঘুনাথ দত্ত বলেন, কাপুরুষের মতো রাতের অন্ধকারে বাংলার পুলিশ এসে লোগো ছিঁড়েছে। সাহস থাকলে দিনের বেলা আসুক। বিজেপির দুমকা জেলার সম্পাদক ফণিভূষণ মন্ডল বলেন, ঝাড়খন্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়্যের একটি চিহ্নও রাখতে দেওয়া যাবে না। তারা বিজেপির পতাকা হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী লুইস মারান্ডি বলেন, “ম্যাসাঞ্জোর কার এবার আমরা তা বুঝে নিতে চাই। আমার ১৪৪টা মৌজার আদিবাসীর আবেগ এই বাঁধের সঙ্গে যুক্ত। আমরা সেচের জল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের কিছুই পাই না। এবার তা বদল করতে হবে।” তাঁর দাবি রাস্তার ওপর যে ওয়েলকাম গেট লাগিয়েছে তার জন্য ঝাড়খন্ড সরকারের কাছে কোনও অনুমতি নেয়নি।
ছবিঃ বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.