ফাইল ছবি
সুনীপা চক্রবর্তী ও শঙ্কর রায়: পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত গোটা রাজ্য। তৃণমূলকর্মীকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রামের টেঙিয়ার দরখুলিতে। মৃত তৃণমূলকর্মীর নাম পবিত্র সরঙ্গী। ধানজমির মধ্যে থেকে ওই তৃণমূলকর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে রয়েছে জামবনি থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, সোমবার পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করেই গোটা জেলায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। যদিও খুনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশও।
অন্যদিকে রায়গঞ্জে বোমা বিস্ফোরণে জখম বাবা ও ছেলে। অভিযোগ, বাবা নুরুল আনসারি ও আফজল আনসারি বাড়িতে বোমা বাঁধছিলেন। সেই সময় কোনও ভাবে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে দু’জনেই গুরুতর আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে তাঁদের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের জেরে চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন নুরুল আনসারি। তাঁর ডান চোখটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একইভাবে বিস্ফোরণের ঝলসে গিয়েছে আফজল আনসারির ডান হাত। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার ভাটোলের ভাতুন গ্রামে।
জানা গিয়েছে, এদিন ভাতুন গ্রামে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। সেই বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করেই অশান্তি ছড়ায়। এলাকায় আহত আফজল আনসারির নেতৃত্বেই বোর্ড গঠন হয়। অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যার পর বাড়িতেই বাবা নরুলকে নিয়ে বোমা মজুত করছিল আফজল। সেইসময় কোনওভাবে বিস্ফোরণটি ঘটে। রাতে নিস্তব্ধ পাড়ায় আচমকা বিস্ফোরণের আওয়াজে প্রতিবেশীর ছুটে আসেন। দেখেন বাবা ও ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন রায়গঞ্জ থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস। সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়। আহতদের বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সংঘর্ষের কারণেই হয়তো বাড়িতে বোমা মজুত করে রেখেছিল আনসারিরা। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদের পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত মামলার রায় বেররনোর পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েতগুলিতে বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। আর বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করেই একের পর এক গোষ্ঠী সংঘর্ষ প্রকাশ্যে আসছে। কোথাও শাসক বিরোধী সংঘর্ষ তো কোথাও শাসকদলের দুই গোষ্ঠী মধ্যে লড়াই। এর জেরে গত তিনদিন ধরে উত্তপ্ত গোটা রাজ্য। ইতিমধ্যে বোর্ড গঠনের বলিও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তালিকায় রয়েছে, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামের মতো জেলাগুলি। ঝাড়গ্রামে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। আবার পুরুলিয়াতে উত্তেজনা সামাল দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মীর। যদিও মৃত্যুর দায় এড়িয়ে পুলিশরে দাবি, দলীয় কোন্দলের জেরে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। সেই সময় ছোঁড়া গুলিতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বেড়ে চলা সংঘর্ষের খবর পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এই ঘটনায় তিনি যারপরনাই বিরক্ত। প্রশাসনকে কড়া হাতে সংঘর্ষ দমনের নির্দেশ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.