Advertisement
Advertisement
Jhargram

আদিবাসী তরুণীকে ‘ধর্ষণ’, পুলিশের জালে কাশ্মীরি যুবক

অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Jhargram: Kashmiri man allegedly harassed tribal woman

ফাইল ছবি।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:August 8, 2024 1:55 pm
  • Updated:August 8, 2024 3:37 pm  

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ২০১৫ সালে ফেসবুকে আলাপ। সেই বন্ধুত্ব রূপ পায় ভালোবাসার। কাশ্মীরি এক শাল বিক্রেতার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আদিবাসী তরুণীর। বাড়ে তাঁদের মেলামেশা। কলকাতা ও বাইরের শহরে ঘুরতেও যায় তাঁরা। অভিযোগ, সেই সময় তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে সহবাস করে ওই কাশ্মীরি যুবক। কিন্তু বিয়ের কথা বলতেই বেঁকে বসেন তিনি।

উলটে স্কুল শিক্ষিকা ওই তরুণীর আপত্তিকর ছবির ভিডিও দেখিয়ে তাঁকে ব্ল‍্যাকমেল করেন অভিযুক্ত। এমনকী খুনের হুমকিও দেয় বলেও অভিযোগ। এর পরই ওই তরুণী কাশ্মীরি যুবকের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অবশেষে অভিযোগের পাঁচ বছর বাদে অভিযুক্তকে কাশ্মীর থেকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

Advertisement

ধৃত রিয়াজ আহমেদ রায়নার বাড়ি জম্মু কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার অকাড গ্রামে। ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার সাব ইন্সপেক্টর জ্যোতি সাউয়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত শনিবার অকাড গ্রামে হানা দিয়ে রিয়াজকে পাকড়াও করে। অনন্তনাগ জেলা আদালতে তুলে রিয়াজকে পাঁচদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছে। ধৃতকে বুধবার ঝাড়গ্রামের বিশেষ দায়রা আদালতে হাজির করানো হলে অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

[আরও পড়ুন: পেট্রাপোল সীমান্তে গড়াল ট্রাকের চাকা, তিনদিন পর শুরু ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য]

অভিযোগ, ঝাড়গ্রামের ওই তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ কয়েকবার সহবাস করেছিল রিয়াজ। তাছাড়াও বিভিন্ন সময়ে মায়ের অসুস্থতা ও পরিবারের প্রয়োজনের কথা বলে ওই তরুণীর থেকে টাকা আদায় করতেন অভিযুক্ত। তরুণী পেশায় স্কুল শিক্ষিকা হওয়ায় টাকা দিতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু ক্রমে টাকার দাবিতে চাপ বাড়াতে থাকে রিয়াজ। ওই তরুণীর সঙ্গে তার আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল‍্যাকমেল করে কয়েক দফায় মোট সাত লক্ষ টাকা আদায় করেছিল অভিযুক্ত। রিয়াজকে টাকা দেওয়ার জন্য ওই তরুণীকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পর্যন্ত নিতে হয়েছিল।

তরুণী পরে বুঝতে পারেন, রিয়াজ তাঁকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে সম্ভোগ করেছে। তরুণী টাকা ফেরতের দাবি জানাতে থাকেন। কিন্তু অভিযোগ, টাকা ফেরত দেয়নি রিয়াজ। উলটে সে তরুণীকে খুনের হুমকি দেয়। এর পর সব যোগাযোগ ছিন্ন করে গা ঢাকা দিয়েছিল ওই কাশ্মীরী যুবক।

২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গ ও জালিয়াতির ধারায় মামলা করে পুলিশ। ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। তখনও রিয়াজের হদিশ মেলেনি। ওই তরুণী আদিবাসী সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে মামলায় পরে আদিবাসী নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনের ধারা যুক্ত হয়। চলতি বছরের গত ৬ জুন রিয়াজকে ফেরার দেখিয়ে ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। এর পরই রিয়াজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। অবশেষে পুলিশ জানতে পারে কাশ্মীরে নিজের গ্রামে ফিরেছে অভিযুক্ত। খবর পেয়ে দুই মহিলা পুলিশকর্মী-সহ পাঁচজন পুলিশের একটি দল কাশ্মীরে গিয়ে রিয়াজকে গ্রেপ্তার করে।

যদিও অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী কৌশিক সিনহা বলেন, “আমার মক্কেলকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “ওই যুবক ফেরার থাকায় তাঁকে ধরা যাচ্ছিল না। মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্যাক করেও হদিশ মিলছিল না। পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারা যায়, নিজের গ্রামেই রয়েছে অভিযুক্ত। এরপর ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার এসআই জ্যোতি সাউ-এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কাশ্মীরে গিয়ে অনন্তনাগ জেলা পুলিশ ও মাট্রন থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে অভিযুক্তকে জালে তোলে।”

[আরও পড়ুন: বিমায় জিএসটি নিয়ে অনড় কেন্দ্র! দায় এড়িয়ে বিরোধীদেরই দুষলেন নির্মলা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement