প্রতীকী ছবি
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: নিজের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা! এহেন কাণ্ডকে ‘বিরলতম ঘটনা’ বলে উল্লেখ করল আদালত। আর এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক সাজা ঘোষণা করল ঝাড়গ্রামের (Jhargram) আদালত। অভিযুক্ত বাবাকে ৩৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। মদ্যপ অবস্থায় নিজের মেয়েকে ধর্ষণের এমন নৃশংস ঘটনা আগে এখানে কখনও ঘটেনি। এদিন বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে এডিজে ২ পকসো (POCSO) আদালতে মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা নন্দ সিংকে ৩৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদলত। তার সঙ্গে ৫০০০ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে তিনমাসের সশ্রম কারাবাসের সাজা। পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ৩ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়ার সুপারিশ করেছে আদালত।
ঝাড়গ্রামে ঘৃণ্যতম ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালে সাঁকরাইল থানা এলাকায়। ১৭ জুলাই ২০১৮ সালে সাঁকরাইল থানায় ঘটনার দিনই অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযুক্ত নন্দ সিংকে ওই দিনই গ্রেপ্তার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরোর স্কুল ছাত্রী তার বাবা নন্দ সিংয়ের সঙ্গে বাড়িতে একা থাকত। তার মা বছর পাঁচেক আগে মারা গিয়েছে। তার এক দাদা বাইরে থাকত। অভিযোগ ঘটনার দিন নন্দ সিং মদ্যপ অবস্থায় দুপুরে বাড়িতে আসেন। মেয়ের কাছে খেতে চান। মেয়ে ভাত দেওয়ার পর খেয়ে উঠে পড়ে সে।
এরপর নাবালিকা মেয়েকে জোর করে ঘরে ভিতরে নিয়ে গিয়ে জামা,প্যান্ট খুলে দিয়ে যৌন নির্যাতনের পাশা পাশি ধর্ষণ (Rape)করে। ঘটনার পরেই মেয়েটি চিৎকার করতে করতে কাঁদতে, কাঁদতে বাইরে এসে তার জ্যেঠিমাকে সব কিছু বলে। সেই সময় তার কাকিমা এবং প্রতিবেশীররাও পুরো ঘটনাটি শোনেন। আর এই ঘটনার শেনার পর প্রতিবেশীরা নন্দকে মারধোর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ওই দিনই থানায় অভিযোগ দায়ের করে বাবার হাতে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি। মেয়েটি ওই ঘটনার জেরে শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই দিনই তাকে সাঁকরাইল ব্লকের ভাঙাগড় গ্রামীন হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল। পাঁচ দন সে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
১৮ আগস্ট, ২০১৮ চার্জশিট (Chargesheet) গঠন হয়। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর মাসে বিচার পক্রিয়া শুরু হয়। মোট ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় আদালতে। আদলত এই ঘটনাকে ‘বিরলতম ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছে। স্পেশ্যাল পাবলিক প্রসিকিউটর পকসো আদালত জয়ন্ত রায় বলেন, “এডিজে ২ আদালতের বিচারক বলেছেন এটি একটি বিরলতম ঘটনা। এখন থেকে এরকম কোন ঘটনা ঘটলে কোনও বাবা,মাকে তার ছেলেমেয়েরা বিশ্বাস করতে পারবে না। সেই জন্য এই সব অপরাধীদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া উচিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.