সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়: ব্যাংক জালিয়াতিতে নতুন ফাঁদ পেতেছে জামতাড়া গ্যাং। এবার গ্রাহকের পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে ফোন বা ই-মেল করে ব্যাংকের কাছে জরুরি ভিত্তিতে টাকা চাইছে জালিয়াতরা। ব্যাংক ক্রস চেক না করলেই বিপদ। গায়েব হয়ে যাবে লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনই প্রতারণার শিকার হলেন দুর্গাপুরের (Durgapur) এক ব্যবসায়ী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী চন্দন দত্তের কাছে ৪ মে তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন এক ব্যাংকের শাখা থেকে ফোন আসে। ব্যাংকের তরফে বলা হয় চন্দনের দাদা কমল দত্তের নামে প্রথমে ই-মেল এবং পরে ফোন করে মেডিক্যাল এমার্জেন্সির জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। এবং অজ্ঞাত নম্বর থেকে আসা ওই কলের সময় ট্রু কলার অ্যাপে কমল দত্তের নাম ভেসে ওঠে। চন্দন বুঝতে পারেন প্রতারকদের তরফে ব্যাংকে ফোন, ই-মেল করা হয়েছে। তাই তিনি কোনও টাকা দিতে বারণ করেন ব্যাংক আধিকারিককে।
কিন্তু ওই দিন একই রকম আরও একটি ফোন গিয়েছিল অন্য এক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকে। কিন্তু সেই ব্যাংকের তরফে বিশ্বাস করা হয় এটি চন্দনের দাদা কমলই করেছিলেন। ফলে সেই বিশ্বাসে নকল কমলের অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে দেন ব্যাংক আধিকারিক। সে ক্ষেত্রে ক্রস চেক করার জন্য চন্দনকে ফোনও করা হয়নি।
বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন চন্দন। কারণ ওই ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি কম ব্যবহার হত। সম্প্রতি ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেক করতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ে। ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা গোটা বিষয়টি বলে। কিন্তু ততক্ষণে ভুল বুঝতে পারলেও যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ব্যাংক জালিয়াতির একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে দুর্গাপুর থানা ও সাইবার ক্রাইমে। ব্যাংকের গাফিলতির অভিযোগও করা হয়েছে।
চন্দন বলেন, “ওই ব্যাংক টাকা ট্রান্সফার করবে কিনা সে ব্যাপারে আমার কাছে কিছুই জানতেই চায়নি। আমাদের অনুমতি ছাড়াই আমার অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। ব্যাংকের গাফিলতির জন্যেই এই ধরনের প্রতারণা বাড়ছে।”
এই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের চিফ ম্যানেজার শ্যামাপ্রসাদ কুলভি জানান, “তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে দিল্লির কোনও ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে টাকাটি ঢুকেছে।” জামতাড়া গ্যাং ছাড়াও নয়া কোনও চক্রের এই কাজ করছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি (১) পূর্ব অভিষেক গুপ্তা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.