অরূপ বসাক: ডিজিটাল ইন্ডিয়া। ব্যাঙ্ক থেকে রান্নার গ্যাস পেতেও আধার কার্ডই ভারসা। প্রযুক্তির পথে পরিচিতি পেতে সরকারের এ সিলমোহরই নাকি ভরসা। কিন্তু প্রযুক্তির এ যুগে মহামূল্যবান আধারটি থাকলেও এতদিন ভোট দেওয়ার অধিকারই পাননি মালবাজার মহকুমার মেটেলি ব্লকের চালসার দর্শনা গোয়েল। পেলেন বার্ধক্যের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। ৫৮ বছর বয়সে ভোটার আই কার্ড হাতে পেলেন বিধবা। জেনে অবাক লাগলেও ডিজিটাল ভারতের এও এক সত্য।
[বেসরকারি হাসপাতাল জানাল এডস, ‘ভুল’ রিপোর্টের জেরে আত্মহত্যার চেষ্টা]
চালসার কুর্তি পাড়ায় বাস দর্শনা গোয়েলের। ২০০৩ সালে স্বামীকে হারিয়েছেন। সংসারে সঙ্গী বলতে এক প্রতিবন্ধী দিদি। তাঁকে নিয়েই কষ্টে দিন চলে। আধার কার্ডের পাশাপাশি রেশন কার্ডও রয়েছে। তা থেকে কিছুটা সুযোগ মিলত। তাতেই কোনওভাবে দিন গুজরান হত। কিন্তু ভোটার কার্ডটি না থাকায় বাকি সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে এতদিন বঞ্চিত ছিলেন দর্শনা। বিধবা ভাতাও জোটেনি তাঁর। বহুবার চেষ্টা করেছেন সরকারের এই পরিচয়পত্রটি জোগাড় করতে কিন্তু পারেননি। ভোটার লিস্টে তাঁর নাম ওঠেনি।
[এবার সরকারি উদ্যোগেই তৈরি হবে ‘খাঁটি’ রসগোল্লা, নাগালেই থাকছে দাম]
শেষে প্রতিবেশী প্রভু বিশ্বকর্মাকে আক্ষেপের কথা জানান দর্শনা। তিনিই এগিয়ে আসেন প্রৌঢ়া বিধবার সাহায্যের জন্য। তিনিই উদ্যোগ নিয়ে নতুন করে আবেদন করেন। আর আট্টান্ন বছর বয়সে মহার্ঘ ভোটার আই কার্ডটি হাতে পান দর্শনা। এত বছরের জীবনে প্রথম ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেন তিনি। কার্ড হাতে পেয়ে মালবাজারের বাসিন্দা জানান, ‘এত দিন ভোটের কার্ড না থাকার জন্য কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে ভোটার কার্ড পেলাম। প্রতিবন্ধী দিদিকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন চলে আমাদের। বাড়িতে পুরুষ বলতে কেউ নেই। এবার তো ভোটার কার্ড হাতে পেয়েছি। বিধবা ভাতা-সহ যাবতীয় সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানাব।’ প্রতিবেশী প্রভু বিশ্বকর্মা বলেন, ‘সত্যি ওঁদের অবস্থা খুবই খারাপ। এবার সরকারি সুযোগ সুবিধা যাতে ওঁদের প্রদান করা হয় তার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি।’
[ঘরে জ্বলে না আলো, বাহারি স্মার্টফোন চার্জ দিতে ছুটতে হয় বহু দূর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.