শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গোটা ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা শিক্ষকপদের অবমাননা। প্রধান শিক্ষক যদি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে শিক্ষারত্ন পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়া হবে। জলপাইগুড়ি কাণ্ডে প্রতিক্রিয়া শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এদিকে শুধু প্রশ্নপত্র ফাঁসই নয়, সাদা উত্তরপত্রও নাকি লোপাট করে দিয়েছিলেন সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক। বৃহস্পতিবার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন ময়নাগুড়ির অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিশ্বনাথ ভৌমিক। মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারিতে তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।
[পর্ষদের নিয়ম ভেঙে দেড় ঘণ্টা আগে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র খুলে ফেললেন প্রধান শিক্ষক!]
এবছরের মতো মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ। কিন্তু, অঙ্ক পরীক্ষার দিন ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে কি ঘটেছিল? প্রধান শিক্ষক কি সত্যিই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিয়েছিলেন? এই প্রশ্নে এখন তোলপাড় গোটা রাজ্য। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাঁকে কলকাতায় পর্ষদের অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফের সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন ময়নাগুড়ি অবর স্কুল পরিদর্শক বিশ্বনাথ ভৌমিক। তাঁর জানিয়েছেন, পরীক্ষা পরিচালনার জন্য ৪টি প্যাকেটে সুভাষনগর হাইস্কুলকে ২৮০০টি উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, উত্তরপত্রের একটি প্যাকেট লোপাট হয়ে গিয়েছে। সেটির আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্কুল পরিদর্শকের দাবি, পরে ওই স্কুলকে আরও ৪৫০টি উত্তরপত্র দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, তা সত্ত্বেও অন্য স্কুল থেকে আরও ৭৫০টি উত্তরপত্র আনা হয়েছিল ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে। স্কুল পরিদর্শক বিশ্বনাথ ভৌমিকের আশঙ্কা, সম্ভবত কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে ওই অতিরিক্ত প্রশ্নপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সুভাষনগর হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন নির্ধারিত সময়ে আগেই প্রশ্নপত্র খুলে ফেলতেন প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়। এক মেধাবী পড়ুয়া-সহ স্কুলের বেশ কয়েকজন উত্তরও জানিয়ে দিতেন তিনি। অঙ্ক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র খোলার সময়ে প্রধান শিক্ষককে হাতনাতে ধরে ফেলেন ময়নাগুড়ির স্কুল পরিদর্শক বিশ্বনাথ ভৌমিক। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, গোটা ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা শিক্ষকপদের অবমাননা। প্রধান শিক্ষক যদি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে শিক্ষারত্ন পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়া হবে। ২০১৪ সালে সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়কে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দিয়েছিল শিক্ষা দপ্তর। এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস মতো উত্তরপত্র লোপাটের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন শিক্ষারত্নপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁর দাবি, ‘গরমিলের কোন প্রশ্নই নেই। সব খাতার হিসেবই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকে ফাঁসানোর জন্যই এসব বলা হচ্ছে।’
[পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহারে মানা, শিক্ষিকাকে জ্যামিতি বক্স ছুড়ল মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.