শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: টাকা নয়, প্রশ্ন আত্মসম্মানের! আর এই প্রশ্নেই ১৮০ টাকার জন্য থানা পুলিশ করলেন এবং সেই টাকা আদায়ও করলেন জলপাইগুড়ি শহরের একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার এক কর্মী। বৃহস্পতিবার সাতসকালে এই অভিযোগ পেয়ে কার্যত চোখ ছানাবড়া কোতয়ালি থানার পুলিশের। দোকানে পুলিশ দেখে শেষপর্যন্ত গ্রাহকের দাবিই মেনে নিলেন এক বই বিক্রেতা।
[পাশে নেই বাবাও, আদালতে মনুয়ার চোখে জল]
ঘটনা ঠিক কী? জলপাইগুড়ি শহরের চার নম্বর ঘুমটির বাসিন্দা পার্থ চক্রবর্তী। পেশায় বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মী। স্থানীয় ফণীন্দ্রদেব স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে তাঁর ছেলে শুভজিৎ। পার্থবাবুর জানিয়েছেন, ছেলের জন্য ভৌতবিজ্ঞান বই কিনতে জলপাইগুড়ির ডিভিসি মোড়ে একটি বইয়ের দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। বইটির দাম ৮৫ টাকা। অভিযোগ, দোকানের এক মহিলা কর্মচারীকে ৫০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন পার্থবাবু। ১৮০ টাকা কেটে ৩২০ টাকা ফেরত দেন ওই মহিলা কর্মচারী। কিন্তু, বই দেননি, উলটে টাকা নেওয়ার কথাও অস্বীকার করেন তিনি। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তর্কাতর্কিও হয়ও। শেষপর্যন্ত ফের আরও ৮৫ টাকা দিয়ে বইটি কিনতে বাধ্য হন পার্থবাবু। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে দোকানে ছিলেন না মালিক রূপক রায়। দোকানে আসার পর, মালিককে পুরো ঘটনাটি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। মালিক ও কর্মচারী মিলে তাঁকে রীতিমতো অপমান করেন। এরপরই ১৮০ টাকা আদায় করার জন্য কোতয়ালি থানার দ্বারস্থ হন বেসরকারি সংস্থার ওই নিরাপত্তা কর্মী।
[হিন্দমোটরে ওভারহেড তার ছিঁড়ে বিপত্তি, ব্যাহত ট্রেন চলাচল]
বৃহস্পতিবার সাতসকালে ওই বইয়ের দোকানে হাজির হয় পুলিশ। পার্থবাবুকে ১৮০ টাকা ফিরিয়ে দেন দোকান মালিক রূপক রায়। তিনি বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই ঘটনা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটেও গিয়েছে।” টাকা ফেরত পাওয়ার পর, অভিযোগও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন পার্থবাবু। কিন্তু, মাত্র ১৮০ টাকার জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের! ঘটনায় হতবাক সকলেই। পার্থ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘ টাকাটা আমার কাছে বড় ছিল না। এটা ছিল আত্মসম্মান ও জেদের প্রশ্ন। একটা নামী দোকান এভাবে ঠকাবে আর সেটা হজম করে নেব, এটা ভাবতে পারিনি। টাকা নয়, সম্মান ফেরত পাওয়ায় আমি বেশি খুশি।”
[হায়দরাবাদে গিয়ে নিখোঁজ জলপাইগুড়ির প্রাক্তন শিক্ষক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.