শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: মহিলাদের কটূক্তির প্রতিবাদে মামাতো দাদাকে খুন! চার বছর পর সেই হত্যাকাণ্ডের সুবিচার মিলল। শনিবার জলপাইগুড়ি আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত খুনিকে ফাঁসির সাজা শোনাল। সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে এদিন সাজা ঘোষণা করা হল। আদালত মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করায় খুশি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। তবে শাস্তি নিয়ে নির্বিকার অপরাধী। আদালত থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকরা তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন, ”কিছু বলার নেই।” জলপাইগুড়ি আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করার ভাবনাচিন্তা করছেন দোষীর আইনজীবী।
নিউ জলপাইগুড়ি থানার অন্তর্গত শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা শংকর দাস পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁর পিসতুতো ভাই সুরেশ রায়ও একই এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্বভাবচরিত্র মোটেই ভালো নয়। দাদা শংকর বারবার এনিয়ে ভাইকে সাবধান করতেন। তা মোটেই ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারতেন না ভাই সুরেশ। এনিয়ে মামাতো-পিসতুতো ভাইয়ের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। তারই প্রভাব পড়ে ওইদিনের ঘটনায়। ভাই মহিলাদের কটূক্তি করতেই তার আপত্তিকর আচরণের প্রতিবাদ করেন শঙ্কর দাস। তার মাশুল দিতে হয় জীবন দিয়ে।
ঘটনা ২০২১ সালের ৪ মার্চ। ভাই সুরেশের টার্গেট ছিল দাদাকে খুন। সেইমতো পরিকল্পনা অনুযায়ী, শঙ্কর চায়ের দোকানে বসতেই অতর্কিতে হামলা চালায় ভাই! প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৮ বার কোপ মারা হয় তাঁকে। লিভার, কিডনিতে গুরুতর আঘাত লাগে শঙ্করের। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ডাক্তাররা জানান, শঙ্করের কিডনি, লিভার একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী, পরিবার সকলেই খুনির ফাঁসির দাবি তোলেন। প্রতিবাদও হয় এলাকায়। ১২ জনের সাক্ষ্য ও একাধিক প্রমাণের ভিত্তিতে নৃশংস খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা শোনাল জলপাইগুড়ি আদালতের অ্যাডিশনাল থার্ড কোর্ট। আদালতের রায়ে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। সকলেই চাইছেন, দ্রুত তা কার্যকর হোক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.