নন্দন দত্ত, সিউড়ি: গ্রাম বাঁচাতে বাসিন্দারা দেবীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন। শুরু করেছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজো। মাতৃ আরাধনার সূচনার পরই আচমকা গ্রামে শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরে আসে। দেবীর প্রতি বিশ্বাসে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ এবারও জগদ্ধাত্রী পুজোয় মাততে চলেছেন রামপুরহাটের দেখুড়িয়া গ্রামে।
[‘আরাধনা’ দেখেই জগদ্ধাত্রী বন্দনার আয়োজন কৃষ্ণনগরের জজকোর্ট পাড়ায়]
গ্রামবাসীদের দাবি প্রায় ৪৫০ বছর আগে গ্রামের রায় পরিবারের ইষ্টদেবী হিসাবে জগদ্ধাত্রী পুজোর শুরু হয়েছিল। নিজেদের জমি সম্পত্তি ও অস্তিত্ব রক্ষা করতে এবং গ্রামে সমৃদ্ধি ফেরাতে দেবীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন বাসিন্দারা। মায়ের নিত্যপুজোর জন্য গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল ভট্টাচার্য পরিবারকে। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম আজও বংশের পুজো চালিয়ে আসছেন। মা জগদ্ধাত্রীকে ইষ্ট দেবী হিসাবে মানেন স্থানীয়রা। পুজোর জন্য জমি দান করে গিয়েছিলেন পুজোর প্রতিষ্ঠাতা রায় পরিবার। অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, জপকালী চট্টোপাধ্যায়, কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়রা রয়েছেন পুজোর দায়িত্বে। তাদের কথায়, “প্রাচীন রীতি মেনে এখানে শুধুমাত্র নবমীর দিন পুজো করা হয়। ওইদিন একসঙ্গে হয় সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী পুজো। দ্বারকা নদী থেকে সুসজ্জিত ভাবে ঘট ভরে আনে কুমারীরা। চারটি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়।”
[সাবেকি প্রতিমার সঙ্গে থিমে সুন্দর ষষ্ঠীতলা বারোয়ারির জগদ্ধাত্রী]
এই পুজোয় অংশ নেন পাশের উদয়পুর, বলরামপুর, কাঁদা, কামাখ্যা, সাতঘড়িয়া সহ আট-দশটি গ্রামের মানুষ। এবার সাড়ে আট ফুটের প্রতিমা তৈরি করছেন রামপুরহাটের অঙ্কন শর্মা। ঢাকিরা আজও বংশ পরম্পরায় পুজোয় ঢাক নিয়ে হাজির হন। পুজোয় গ্রামের মানুষের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেন তারাপীঠের সেবাইত থেকে রামপুরহাট শহরের বাসিন্দারা। এবার ঢাকের আদলে গড়া হবে মণ্ডপ। আলোকসজ্জাও থাকছে চোখ ধাঁধানো। ঝলমল করে উঠবে গোটা গ্রাম। গ্রামবাসীদের ইচ্ছে ইষ্ট দেবীর নামে একটি স্থায়ী মন্দির গড়ার। তারাপীঠ – রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ মন্দির চত্বর সৌন্দর্যায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ছবি: সুশান্ত পাল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.