শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ইসলামপুর কাণ্ডে নয়া মোড়৷ বিতর্কিত উর্দু শিক্ষক মহম্মদ সানাউল্লাহকে আটক করে জেরা করতে শুরু করেছে জেলা পুলিশ৷ দাঁড়িভিট হাইস্কুলে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দু’বার ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷ তারপরও কেন গত ১৮ সেপ্টেম্বর কাজে যোগ দিতে যান তিনি এবং পিছন থেকে তাঁকে কে বা কারা মদত জোগাচ্ছে তাই খতিয়ে দেখতে চাইছে তদন্তকারীরা৷ সূত্রের খবর, মহম্মদ সানাউল্লাহকে জেরা করছে পুলিশ সুপার ও এসডিপিও৷ ইতিমধ্যে গ্রামে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দল৷ মৃত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা৷ ঘটনার তিনদিন পর ঘটনাস্থলে যান তৃণমূলের দুই বিধায়ক কানাইলাল আগরওয়াল ও গোলাম রব্বানি৷ তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা৷
[স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই গাঁজায় টান পড়ুয়াদের! দেখুন ভিডিও]
জানা গিয়েছে, শিক্ষক মহম্মদ সানাউল্লাহর আসল বাড়ি কলকাতার খিদিরপুরে৷ গত ১৬ দিন ধরে দাঁড়িভিট গ্রামের মেলার মাঠ এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বাস করছেন তিনি৷ চলতি মাসের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম দাঁড়িভিট হাইস্কুলে উর্দুর শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিতে যান তিনি৷ কিন্তু সেখানে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷ এরপর আবার পরে দিনও কাজে যোগ দিতে গেলে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তিনি৷ অভিযোগ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার জন্য নিয়োগের কথা থাকলেও, তাঁকে নিয়োগ করা হয় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক হিসাবে৷ এই নিয়োগের পিছনে প্রশাসন বা শীর্ষ মহলের ইন্ধন রয়েছে অভিযোগ করতে শোনা যায় পড়ুয়াদের৷ সূত্রের খবর, এই রহস্যের সমাধানেই ওই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ৷ তাঁকে জেরা করে ঘটনার গভীরে পৌঁছাতে চাইছেন তদন্তকারীরা৷ উর্দু শিক্ষক মহম্মদ সানাউল্লাহকে জেরা করলে একাধিক মিসিং লিঙ্কের সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে বলে অনুমান পুলিশের৷
[চোরের এলোপাথাড়ি কোপ, ন’বছরের খুদের প্রচেষ্টায় প্রাণ রক্ষা পরিবারের]
পাশাপাশি, রবিবার সকালে অর্থাৎ ঘটনার তিনদিন পর দাঁড়িভিট গ্রামে যান তৃণমূলের দুই বিধায়ক৷ যান মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ও ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইলাল আগরওয়াল৷ তাঁদের দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা৷ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান মৃত দুই ছাত্রের পরিবার৷ দোষীদের যথাযথ শাস্তির আশ্বাস দেন শাসক দলের দুই প্রতিনিধি৷ এরপর রবিবার সকালে ওই দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজেপির প্রতিনিধিরাও৷ দলে ছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও মহিলা মোর্চার নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়৷ রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনকে কার্যত তুলোধোনা করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়৷ অভিযোগের আঙুল তোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে৷ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ গুলি চালিয়েছে এবং সেই গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের৷ সেই পুলিশকেই আড়াল করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মৃত ছাত্রের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মুকুল রায়ও৷ এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠাবেন বলেও জানান তিনি৷ রবিবারেও থমথমে রয়েছে দাঁড়িভিট গ্রাম-সহ গোটা ইসলামপুরের পরিস্থিতি৷ বাড়ি থেকে বাইরে এলেই যুবকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.