শুভময় মণ্ডল:ধরেই নিয়েছিলেন দাদা আর নেই। ডেথ সার্টিফিকেটও দিয়ে দিয়েছিল প্রশাসন। হ্যাম রেডিওর দৌলতে সেই ‘মৃত’ দাদাকেই ফিরে পেলেন ভাই। সাড়ে পাঁচ দশক পর। দীর্ঘদিন পর পরিবার ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভবঘুরে বৃদ্ধ। হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা।
দীর্ঘদিন ধরেই সোদপুর স্টেশনের ৪ নম্বর প্লাটফর্মেই থাকতেন বছর ছিয়াত্তরের চারু বেসন। সেখানেই এক হ্যাম রেডিও অপারেটরের নজরে পড়েন চারু। তবে তিনি একাধিকবার জিজ্ঞাসা করলেও নাম-পরিচয় কোনও কিছুই স্পষ্টভাবে বলতে পারেননি চারু। তবে কথায় কথায় রেডিও অপারেটর জানতে পারেন ভবঘুরে বৃদ্ধের এক ভাই ও এক বোনের কথা। বৃদ্ধের থেকে পাওয়া টুকরো টুকরো তথ্য জোড়া লাগিয়েই তাঁর ভাইয়ের খোঁজ শুরু করেন রেডিও অপারেটররা। জানা যায়, ওড়িশায় থাকেন বৃদ্ধের ভাই। এরপর ওড়িশার হ্যাম রেডিও অপারেটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওড়িশার রেডিও অপারেটর দুষ্মন্তকুমার দাস খুঁজে বের করেন বৃদ্ধের ভাই অযোধ্যাকে। ওড়িশা পুলিশের সহযোগিতায় বুধবার সোদপুরে পৌঁছন অযোধ্যা। সেখানেই দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ফের দেখা দুই ভাইয়ের। কান্নায় ভেঙে পড়েন দু’জনেই।
জানা গিয়েছে, ২১ বছর বয়সে হঠাৎই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান চারু। একাধিক জায়গায় খোঁজখবর করা হলেও কোথাও তাঁর হদিশ মেলেনি। দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকায় প্রশাসনের তরফে চারুর ডেথ সার্টিফিকেটও দিয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবেই দাদাকে ফিরে পাওয়ার আশাই ছিল না অযোধ্যার। ফলে হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষের তরফে দাদার কথা জানিয়ে যোগাযোগ করতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি দাদার দেখা পেতে ওড়িশা থেকে হাজির হয়ে যান সোদপুরে। দাদাকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত অযোধ্যা। হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের কথায়, “চারুকে মৃত ধরে নিয়েছিল পরিবার। আমরা তাঁকে পরিবারে ফেরাতে পেরেছি, তাতেই খুশি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.