গৌতম ব্রহ্ম: তটে আছড়ে পড়ার আগেই ভেঙে দেওয়া হচ্ছে ঢেউ। মুম্বই মেরিন ড্রাইভকে ‘টেট্রাপড’ প্রযুক্তির কারিগরিতেই রক্ষা করা হচ্ছে। এবার গঙ্গাসাগরকে (Gangasagar) বাঁচাতেও এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে ঢাল করল রাজ্যের সেচ দপ্তর। নেওয়া হল ৯ কোটি টাকার পাইলট প্রকল্প। ২০০০ সালে সাগর আর কপিলমুনির আশ্রমের মধ্যে দূরত্ব ছিল ৮ কিলোমিটার। আর এখন মাত্র ৫০০ মিটার। সাগর দ্রুত এগিয়ে আসছে মন্দিরের দিকে। এখনও পর্যন্ত অন্তত চারবার সমুদ্র গ্রাস করেছে কপিল মুনির মন্দির। এই হারে এগিয়ে এলে অচিরেই ফের সাগর গিলে খাবে মন্দির (Temple)।
সমুদ্র তটের (Coastal areas) ভাঙন রুখতে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট, চেন্নাই আইআইটি ও ম্যাকিন্টোস বার্নের সহযোগিতায় ৪ কোটি টাকা খরচে সমীক্ষা চালিয়ে ১৪১ কোটি টাকার প্রজেক্ট তৈরি করা হয়। কিন্তু উপকূলীয় সংরক্ষণ আইনের দোহাই দিয়ে এই প্রকল্পে সবুজ সংকেত দেয়নি কেন্দ্র। রাজ্যের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানিয়ে দেন, এই ১৪১ কোটির মধ্যে রাজ্যের দেওয়ার কথা ৬৬ কোটি। বাকিটা দেবে কেন্দ্র। ফলে ভাঙন ঠেকানোর যৌথ কর্মসূচি বিশ বাঁও জলে। বাধ্য হয়েই রাজ্য নিজের খরচে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা শুরু করেছে। ৯ কোটি টাকার একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেচ দপ্তর। যেখানে টেট্রাপড প্রযুক্তি ব্যবহার করে তটে আছড়ে পড়ার আগেই ভেঙে দিয়ে ঢেউয়ের জোর কমানো হচ্ছে। জিও ব্যাগ, শলবল্লা দিয়ে পাড় বাঁধানো হচ্ছে। যাতে মেলার সময় পুণ্যার্থীরা সহজে স্নান করতে পারেন। আসলে স্নান সেরেই সবাই মন্দিরে পুজো দিতে যান।
কপিল মুনির মন্দিরের সামনে ২ নম্বর ঘাট। এই ঘাটেই ভিড় বেশি। অথচ এই ঘাটটির অবস্থাই সব চেয়ে শোচনীয়। মন্দিরের মোহন্ত সঞ্জয় দাস জানালেন, আমফান পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় যশের (Cyclone Yaas) সময় মন্দির চত্বরে সমুদ্রের জল ঢুকে যায়। যা পরিস্থিতি এই ভাঙন রোধ করা না গেলে আবার নতুন করে মন্দির গড়তে হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এর আগে চারটি মন্দির সমুদ্র গহ্বরে তলিয়ে গিয়েছে। বর্তমান মন্দির হয়েছে ১৯৭৩ সালে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উত্তর দক্ষিণ মেরুর বরফ গলছে। সমুদ্রতলের উচ্চতা বাড়ছে। গঙ্গাসাগরেও জলের উচ্চতা সাড়ে চার ফুট থেকে বেড়ে সাড়ে ছয় ফুট হয়েছে। পূর্ণিমায় ফের জলস্ফীতির সম্ভাবনা। নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে জলতল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.