Advertisement
Advertisement

মার খেয়ে বাড়ি ছেড়েও পড়া ছাড়েননি আলমিনা

তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে শিক্ষামহল।

International Women's Day: Haldia girl fought child marriage bid to continue study
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 8, 2018 1:28 pm
  • Updated:September 13, 2019 3:25 pm  

একবিংশ শতকেও লিঙ্গ বৈষম্য ঘুচল না। কন্যাসন্তানের জন্ম অনেকের কাছে অপরাধের মতো। এভাবে এসে গেল আরও একটা নারী দিবস। সমাজে নারী-পুরুষের তফাতের মধ্যে নিজেদের মতো করে মাথা উঁচু করে এগোনোর চেষ্টা করছেন অনেকেই। বাংলার নানা প্রান্তে রয়েছে এমন অজস্র সম্ভাবনা। সেই অর্ধেক আকাশের খোঁজে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। এই সব আন সাং হিরোইনদের নিয়ে আমাদের বিশেষ প্রতিবেদন ‘তোমারে সেলাম’। আমাদের প্রতিনিধি হলদিয়ার চঞ্চল প্রধান, এক যোদ্ধার সঙ্গে আলাপ করালেন।

জেদ চেপেছিল পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার। তাই বাবা শেখ মইনুদ্দিন, পাত্র জুটিয়ে আনলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘বিয়ে আমি করব না।’ পড়াশোনা বন্ধ করে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় প্রচণ্ড রেগে গিয়ে তার বাবা তো বাড়ি থেকে বের করেও দিলেন। তবুও টলেননি আলমিনা খাতুন। গল্পের মতো মনে হলেও এটাই আলমিনা খাতুনকে আলাদা করেছে। তমলুকের বহিচাড় গ্রামের বাসিন্দা এখন দৃষ্টান্ত৷

Advertisement

[কামারশালার হাপর টেনেই সংসারের খিদে মেটান মঙ্গলা]

বাবা ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর মাকে নিয়ে এ গ্রাম ও গ্রাম ঘুরে তিনি এখন বাড়খোদা গ্রামের একটি বাড়িতে থাকেন। মা মাজেদা বিবি মেয়েকে সমর্থন করায় তিনিও স্বামীর ঘর পাননি৷ আর এক ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে সেই আলমিনা বিএ, এমএ পাশ করে বিএড পড়ছেন। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে এমএ-তে যেদিন প্রথম হলেন, সেদিনই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভালর জন্য জেদ একজনকে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। সেদিনই তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে শিক্ষাজগত।

সালটা দু’হাজার আট। তমলুকের বহিচাড় বিপিন শিক্ষানিকেতনের নবম শ্রেণির ছাত্রী আলমিনা। চাকরি করে এমন একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দেন বাবা মইনু। বেঁকে বসেন আলমিনা। মা মাজেদা মেয়ের পাশে দাঁড়ান। আর তাতে চটে লাল হন বাবা। মারধরের পরে বাড়িছাড়া। খবর পেয়ে বহিচাড় বিপিন শিক্ষা নিকেতনের ভূগোলের শিক্ষক মৌসম মজুমদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন৷ এগিয়ে আসেন শিক্ষক উত্তম চৌধুরি, ভক্তি সাউট্যা, প্রভাত মাইতি, হেমন্ত স্যারও। মেয়ের পড়াশোনার জন্য উনষাট বছরের বয়স্ক মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেছেন। দারিদ্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এখনও পড়াশোনা করে যাচ্ছেন আলমিনা। তিনি ইতিহাসের গবেষক হতে চান। নারী দিবসে পূর্ব মেদিনীপুরের অসংখ্য কিশোরী আলমিনাকে স্যালুট জানায়।

[খবরের ফেরিওয়ালা, সংসারের ছাতা হয়ে একাই ছুটে চলেন ফুলেশ্বরী]

ছবি: রঞ্জন মাইতি

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement