স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: লাখ লাখ টাকার কমিশনে বিদেশে দেদার শিশু পাচার৷ জলপাইগুড়ির হোম থেকে আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, স্পেন, ফ্রান্স ও স্কটল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত ১৭টি শিশুকে পাচার করা হয়েছে৷ হোমের কর্ণধার ধৃত চন্দনা চক্রবর্তী ও আধিকারিক সোনালি মণ্ডলকে জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছে সিআইডি ও পুলিশ৷ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু নথি৷
সিআইডি সূত্রে খবর, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও ফ্রান্সে জলপাইগুড়ির ওই হোম থেকে চারটি শিশুকে পাচার করা হয়৷ আমেরিকায় পাচারে একটি শিশুর ‘দর’ রাখা হয়েছিল দশ লক্ষ টাকা৷ আবার ওই শিশুটিকে দেখিয়েই ভারতীয় এক দম্পতির কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা আদায় করা হয়৷ সিঙ্গাপুরে দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে একটি শিশুকে পাচার করা হয়েছে বলেও সোমবার সকালে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছেন সিআইডি ও পুলিশের আধিকারিকরা৷
ফের মালদা থেকে উদ্ধার ২০০০ টাকার জাল নোট, গ্রেপ্তার ১
এদিকে, শিশু পাচারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী জুহি চৌধুরি সরকারের৷ ধৃতদের জেরা করে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সিআইডি৷ ধৃত চন্দনা চক্রবর্তী ময়নাগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা৷ সেই সূত্রেই ওই বিজেপি নেত্রীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়৷ জুহির হাত ধরেই কলকাতা ও দিল্লিতে শিশু পাচারের ‘চেন’ তৈরি হয়েছিল, এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জুহি৷
জেরায় মেলা তথ্যের ভিত্তিতে এদিন সকালে ময়নাগুড়িতে হানা দিয়ে চক্রে জড়িত থাকার সন্দেহে দু’জনকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি৷ ঘটনার তদন্তে সোমবার কলকাতা থেকে সিআইডির আরও কয়েকজন আধিকারিক যাচ্ছেন জলপাইগুড়ি৷ দত্তকের নামে জাল নথি তৈরি করে বিদেশে শিশু পাচারের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ৷ চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যানের সই জাল করে উদ্ধার হওয়া শিশুদের চন্দনা নিজের হোমে এনে রাখত৷ তার পর দস্তুরমতো ‘দর’ উঠলে সেই শিশুকে পাচার করে দেওয়া হত, তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছেন পুলিশ আধিকারিকরা৷ হোমে তল্লাশি চালিয়ে ২০১৫ সালের আগে সিডব্লুসি চেয়ারম্যানের সই জালের বিষয়ে বেশ কিছু নথিপত্র পেয়েছেন তাঁরা৷
মাধ্যমিকের আগে এই বিষয়গুলিতেই পড়ুয়াদের সতর্ক করলেন পর্ষদ সভাপতি
জলপাইগুড়ি শহরের কেরানিপাড়ায় চন্দনার হোম নর্থবেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেণ্ট সেণ্টারের অধীনে থাকা ‘বিমলা শিশু গৃহ’ থেকে শিশু পাচারের প্রথম অভিযোগ ওঠে গত বছরের জুলাইয়ে৷ দত্তক দেওয়ার নামে মোটা টাকার বিনিময়ে শিশুদের বিদেশে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ মিলতেই তদন্তে নামে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি৷ প্রমাণ হাতে আসতে ওই হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তারা৷ একইসঙ্গে তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে তৎপর হয় রাজ্য চাইল্ড রাইট অ্যান্ড ট্রাফিকিং৷ প্রাথমিকভাবে ছ’টি শিশুকে পাচার করা হয়েছে বলে জানা যায়৷ এর পর গত ১৬ জানুয়ারি রাজ্য চাইল্ড রাইট অ্যান্ড ট্রাফিকিং কমিটি ওই হোমে থাকা ১৪টি শিশুকে অন্য হোমে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়৷
‘ভুতু’র ডাকে নির্মল হবে বর্ধমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.