ছবি: ফাইল
রাজা দাস, বালুরঘাট: দায়িত্ব পাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যে নতুন জেলা কমিটির তালিকা তৈরি করলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। খুব শিগগিরই প্রস্তাবিত নতুন জেলা কমিটি অনুমোদনের জন্য রাজ্য কমিটিতে পাঠাবেন তিনি। নতুন তালিকায় অবশ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র ব্রাত্য, যা নিয়ে ইতিমধ্যে জেলার রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে৷
লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্রে হারের দায় তৎকালীন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের উপরই চাপিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ৷ তারপর দলের সর্বস্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনে আমূল বদল ঘটিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়েছেন অর্পিতা ঘোষ৷ তারপর তাঁর সঙ্গে বিপ্লবের দূরত্ব আরও বেড়েছে৷ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় থেকেই অর্পিতা ঘোষের বিরুদ্ধাচারণ করে দলনেত্রীর রোষানলে পরেছিলেন বিপ্লব মিত্র। আবার দলনেত্রীর স্নেহধন্যা প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ বালুরঘাট থেকে হেরে যাওয়ার পর, বিপ্লব মিত্রকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্পিতার তোলা অভিযোগেই মূলত বিপ্লব মিত্রকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবী বিপ্লব শিবিরের।
এরপর থেকেই অর্পিতা বনাম বিপ্লবের পুরনো লড়াই ফের জোরদার হয়েছে জেলায়। জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরেই বিপ্লবপন্থী তৃণমূল যুব সভাপতি উত্তম ঘোষের পদ কেড়ে নেওয়া হয়। আবার বিপ্লব বিরোধী হরিরামপুরের নেতা শুভাশিস পালদের দলে ফেরানো হয়েছে। এছাড়া বিপ্লব বিরোধী নেতা সত্যেন রায়দের গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন অর্পিতা। এককথায় নতুন জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে বিপ্লব মিত্রকে।
কিন্তু এই মুহূর্তে ঠিক ততটাই যেন ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছেন দুঁদে রাজনীতিবিদ বিপ্লব মিত্র। যিনি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, তাঁকে সাফাই দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি এমন সিদ্ধান্তে ‘শকড’। যাঁর অনুগামীরা প্রকাশ্যেই ‘বহিরাগত’ জেলা সভাপতিকে মানেন না বলে ঘোষণা করেছেন। তবে বিপ্লব মিত্র কিন্তু এখনও দলত্যাগের মত কোনও পদক্ষেপের থেকে শতহস্ত দূরে৷এর মধ্যে তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ জেলা কমিটির তালিকা তৈরি করে ফেলেছেন। তিনি প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়, বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল এবং প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদাকে সঙ্গে নিয়েই সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মূলত এই কজনকে নিয়ে একটি টিম করে সংগঠনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন অর্পিতা।
তবে এই টিমে কিন্তু বিপ্লব মিত্রকে একেবারেই ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, এবারে জেলা কমিটি গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও কিন্তু বিপ্লব মিত্রের পরামর্শ ছাড়াই করছেন অর্পিতা ঘোষ৷ সেক্ষেত্রে শংকর চক্রবর্তীর পরামর্শ নেওয়া হলেও, বিপ্লব মিত্রর সঙ্গে যোগাযোগই করেননি নতুন জেলা সভাপতি৷ তবে প্রস্তাবিত নতুন জেলা কমিটি নিয়ে বা তাঁর বাদ পড়ার বিষয়ে কিছু বলতে চাননি বিপ্লব মিত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.