অরূপ বসাক, মালবাজার : রেশনিং বা গণবন্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। দুর্নীতি রুখতে পরিদর্শনের পাশাপাশি চলছে লাগাতার অভিযানও। তারপরেও বেশকিছু জায়গায় গলদ থেকেই যাচ্ছে বলে অভিযোগ। রবিবারই তেমনই এক গলদ হাতেনাতে ধরলেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক-সহ রেশন ও খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা।
দু’দিন ধরে মালবাজার এলাকায় বিভিন্ন পরিষেবা পরিদর্শন করছিলেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। রবিবার তিনি মালবাজার মহকুমার বাড়ি চাবাগানের গৌরিশঙ্কর আগরওয়ালের রেশন দোকানে হানা দেন। দেখা যায়, সেই দোকানে কেরোসিন তেল দেওয়ার ক্ষেত্রে কারচুপি চলছে। এই দোকান থেকে শ্রমিকদের কেরোসিন তেল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এদিন তার হাতেনাতে প্রমাণ মেলে।
দেখা যায়, যে যন্ত্র দিয়ে তেল মাপা হচ্ছে, সেই যন্ত্রের নিচে ফুটো বা ছিদ্র রয়েছে। যখন এই যন্ত্র দিয়ে তেল ড্রাম থেকে তুলে গ্রাহকদের দেওয়া হয়, তখন বেশ কিছু পরিমাণ তেল ড্রামে পরে যাচ্ছে। আর তাই তেল কম পাচ্ছেন গ্রাহকরা। যা খালি চোখে দেখে বুঝতে পারা খুব মুশকিল। এই রেশন দোকানের প্রায় ২৮০০ গ্রাহক রয়েছেন। যারা প্রায় সকলেই চাবাগানের শ্রমিক। তাঁদের দি্নের পর দিন ঠকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। প্রতারিত গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, অতিরিক্ত তেল বাইরে বেশি দামে বিক্রি করেন ওই রেশন ডিলার। এলাকার বাসিন্দা দৌলত মিঞা, আমিরান শেখ বলেন, “আমরা এই দোকান থেকে কেরোসিন তেল নি। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে দেখি তেল কম। আজ বুঝতে পারলাম, এই রেশন দোকানদার কীভাবে শ্রমিকদের প্রাপ্য তেল থেকে চুরি করছে।”
মালবাজারের খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক প্রাণেশ্বর বিশ্বাস বলেন,“এই দোকানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জলপাইগুড়ি জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “অবিলম্বে তেল মাপার যন্ত্রগুলো বদলের নির্দেশ দিয়েছেন।” এ বিষয়ে রেশন দোকান মালিক গৌরিশংকর আগরওয়াল বলেন, “যন্ত্রে সামান্য ছিদ্র আছে। এখান থেকে বেশি তেল পরে না। তাছাড়া আজকেই আমরা সব তেল মাপার যন্ত্র বদলে দেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.