সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ক্যানিংয়ের ছায়া রাজ্যের আরও দুই জেলায়। ‘বাংলার গর্ব মমতা’ প্রকল্পের সূচনার দিনই রাজ্যের শাসকদলের অন্তর্কলহ একেবারে প্রকাশ্যে। মালদহের মালতীপুর বিধানসভা এবং দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বেঁধে গেল বিরোধ। যার জেরে প্রথম দিনেই মুখ থুবড়ে পড়ল ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি।
মালদহের মালতীপুরে কর্মসূচির সূচনায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও ডাক পাননি কলের পুরনো নেতা-কর্মীরা। সেই ক্ষোভ তাঁরা উগরে দিলেন তাঁরা। রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কর্মীরা। পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে ওঠায় চাঁচোল দু’নম্বর ব্লকের মালতীপুর কমিউনিটি হলে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচিটি কার্যত ভণ্ডুল হয়ে যায়। বাঁশ নিয়ে হাতাহাতি হয় দু’পক্ষের।
কিন্তু মালতীপুরে শুরুতেই ঘটে বিপত্তি। প্রতিটি বিধানসভার জন্য প্রধান আড়াইশো জন সদস্যদের তালিকা তৈরি করে দিয়েছিল দল। এই কর্মসূচির অংশ হিসাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করে অঙ্গীকারবদ্ধ হন উপস্থিত কর্মীরা। কিন্তু তারপরই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা একে অপরের প্রতি তেড়েফুঁড়ে গেলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। মালতীপুর বিধানসভায় কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে মালতীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সিকে। অপর পক্ষের অভিযোগ, তাঁর হাতে যে আড়াইশো জন কর্মীর তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে চাঁচোল-২ ব্লক তৃণমূল নেতা ইমদাদুল হকের গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম নেই। ফলে তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করেন। এমনকী এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে মঞ্চে কারা বসবে এনিয়েও একপ্রস্থ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। একটা সময়ে বাঁশের ডান্ডা নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা গিয়েছে নেতাকর্মীদের।
অন্যদিকে, দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রেও একই পরিস্থিতি। জনসংযোগ কর্মসূচিতে ব্রাত্য দলেরই একাংশ। অভিযোগ, কাউন্সিলর থেকে মেয়র পারিষদ সদস্য, এমনকী শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা আমন্ত্রণই পেলেন না এই কর্মসূচিতে। বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়াল বিরোধীদের দেখাই গেল না এই কর্মসূচিতে। খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন শাসকদলের জেলা সভাপতির। দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র পারিষদ সদস্য অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় কিংবা আইএনটিটিইউসি নেতা ও মেয়র পারিষদ সদস্য প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায়নি এখানে। তৃণমূলের ২ নম্বর ব্লক সভাপতি শরদিন্দু বিশ্বাসের পালটা দাবি, “সবাইকে ডাকা হয়েছিল। বিভিন্ন কাজ থাকায় কেউ কেউ আসতে পারেননি। আমাদের কয়েকজন সেই বিষয়ে জানিয়েওছেন।” মেয়র দিলীপ অগস্তিকে এই কর্মসূচিতে হাজির থাকার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি ঘরোয়া কাজে ব্যস্ত থাকায় থাকতে পারেননি। নয়া জনসংযোগ কর্মসূচির শুরুতেই শাসকদলের দ্বন্দ্ব নিয়ে দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, “এটা কাম্য নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.