শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: উৎকন্ঠার মাঝেই আশার আলো। কাশ্মীর থেকে অবশেষে ফোন এল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে। ফোনের ওপারে জাহিরুদ্দিন। স্ত্রীকে জানালেন, সুস্থ রয়েছেন তিনি। ফোন পাওয়ার পর যেন নতুন জীবন পেলেন জাহিরুদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা। আনন্দে চোখের জল আর বাঁধ মানছে না তাঁদের।
মঙ্গলবার রাতে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে গিয়েছে কাশ্মীরের কুলগামে। কাতরাসু গ্রামে শ্রমিকদের বাড়ি থেকে বের করে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ৫ বছরের রফিক শেখ, ৩৫ বছরের কামরুদ্দিন, মুরসালিম শেখ ৪৫ বছরের, নইমুদ্দিন শেখ ৪২ বছরের এবং রফিকুল শেখ ২৩ বছরের। মৃত্যু অবধারিত বুঝতে পেরে কোনওক্রমে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন মুর্শিদাবাদের জাহিরুদ্দিন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিনিও। যদিও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। তড়িঘড়ি তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল শ্রীনগর হাসপাতালে। সেখানেই শুরু হয় চিকিৎসা।
ঘটনার পর পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন জাহিরুদ্দিন। এরই মাঝে তাঁর সঙ্গীদের মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে জাহিরুদ্দিনের গ্রামে। স্বভাবতই অজানা আতঙ্ক মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল ওই যুবকের পরিবারেও। স্বামী কেমন আছেন, কোথায় আছেন জানতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন স্ত্রী পারমিতা। বুধবার সকাল যেন একমুঠো রোদ্দুর নিয়ে এল তাঁর জীবনে। জানা গিয়েছে, এদিন সকালে শ্রীনগর থেকে স্ত্রীকে ফোন করেছেন জাহিরুদ্দিন। জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার করে তাঁর শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে। এখন আর কোনও বিপদ নেই। খুব শীঘ্রই বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর পাওয়া মাত্রই চোখের জলেই আনন্দ প্রকাশ করেছে জাহিরুদ্দিনের পরিবার। প্রসঙ্গত, মাস দুয়েক আগেই নবগ্রামের বেলুড়ি গ্রামের বাসিন্দা পারিতা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাহিরুদ্দিনের। বিয়ের পর মাস খানেক আগে কাজের উদ্দেশ্যে কাশ্মীর পাড়ি দিয়েছিলেন জাহিরুদ্দিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.