রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: প্রচারে কোনও খামতি নেই। কিন্তু, কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না। স্রেফ লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে যেমন রোগ গোপন করে রাখেন, তেমনি বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষাও করাতে আগ্রহ দেখায় না অনেক পরিবারই। ফলে এ রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। এই রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন কালনার এক দম্পতি। তাঁদের উদ্যোগে খুশি চিকিৎসকরা।
[ চোখে সংসার গড়ার স্বপ্ন, হাতে হাত রেখে ঘর ছাড়লেন দুই বান্ধবী]
স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক। কিন্তু বিয়ের আগে কারওই রক্ত পরীক্ষা করা হয়নি। এখন ফল ভোগ করছেন কালনার দেকল দাস ও তাঁর স্ত্রী কনকলতা। জন্ম থেকে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ওই দম্পতির একমাত্র মেয়ে মৌমিতা। মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেকলবাবুকে। পেশায় তিনি গাড়ির চালক। শুধু চিকিৎসাই নয়, মৌমিতার ভবিষ্যত নিয়েও দুঃশ্চিন্তার শেষ নেই দাস দম্পতির। নিজেদের ভুল হয়তো আর শোধরানোর সুযোগ নেই। ওই দম্পতি চান, স্রেফ সচেতনতার অভাবে ভবিষ্যতে যেন আর কোনও বাবা-মায়ের তাঁদের মতো পরিণতি না হয়, কোনও পরিবারের যেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম না হয়।
থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কী পরিকল্পনা নিয়েছেন ওই দম্পতি? নিজেদের ও একমাত্র মেয়ের ছবি দিয়ে লিফলেট ছাপিয়েছেন তাঁরা। সেই লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে এলাকায়। নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেই মানুষকে সচেতন করতে চান দেকল দাস ও তাঁর স্ত্রী কনকলতা। লিফলেটে একমাত্র মেয়ে মৌমিতারও ছবি দিয়েছেন। লিফলেটে তিনজনের ছবি চিহ্নিত করে বোঝানো হয়ে গিয়েছে কীভাবে বাবা-মায়ের থেকে সন্তানের রক্তের সংক্রমিত হতে পারে থ্যালাসেমিয়ার জীবাণু! কালনায় অভিনব এই প্রচারে সাড়াও পড়েছে যথেষ্ট। কালনার শহরে দীর্ঘদিন ধরেই থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করছেন স্থানীয় সমাজসেবী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক নরেশচন্দ্র বিশ্বাস। জানা গিয়েছে, তিনি প্রথম লিফলেট ছাপিয়ে দেকলবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে থ্যালাসেমিয়া রোধে প্রচার এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন। সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান দাস দম্পতি।
[ সোনারপুরের জঙ্গলে লেন্সবন্দি দুর্লভ আয়না মাকড়শা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.