তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গবাসীদের জন্য সুখবর। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে উত্তরবঙ্গে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করতে উৎসাহী হয়েছেন শিল্পপতিরা। কোচবিহার থেকে মালদহ প্রত্যেক জেলাতেই শিল্প গড়ে তোলা হবে। হবে কর্মসংস্থান। কাজের খোঁজে আর ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হবে না এখানকার শিক্ষিত যুবসমাজকে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালি এলাকায় অবস্থিত বিশ্ববাংলা শিল্পীহাটের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘উত্তরবঙ্গ বাণিজ্য মেলা’য় এমনই তথ্য দিলেন রাজ্য সরকারের শীর্ষ আধিকারিকেরা।
এদিন রাজ্যের আধিকারিকরা জানান, বিভিন্ন শিল্পপতিরা উত্তরবঙ্গের রসদ নিয়ে গড়ে তুলবেন শিল্প। যেখানে প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে। টি-টুরিজম, রিয়েল এস্টেট, হোটেল, কৃষি সামগ্রী, খাদ্য ও উদ্যানপালন, হসপিটালিটি-সহ একাধিক বিভাগেই শিল্প গড়ে তোলা হবে। আগামী দু’বছরের মধ্যে সমস্ত প্রকল্প শুরু হয়ে যাবে। অনেক প্রকল্প এক বছরের কম সময়ে তৈরি হয়ে যাবে। খুব স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষের জন্য আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বদলানোর সুযোগ থাকছে।
এ দিনের এই বাণিজ্য সম্মেলন মূলত রাজ্য সরকারের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের উদ্যোগে এবং ইণ্ডিয়ান চেম্বার ওফ কমার্স, কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনায় সম্পন্ন হয়। এদিনের এই সম্মেলনে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের ডিরেক্টর রাজেশ পাণ্ডে, কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির উত্তরবঙ্গ শাখার চেয়ারম্যান প্রদীপ আগারওয়াল, ইণ্ডিয়ান চেম্বার ওফ কমার্সের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জয় গোয়েল-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। এদিনের সম্মেলনে উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলা থেকেই শিল্পপতি ও তাঁদের সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পপতিদের একাধিক সমস্যা নিয়েও এদিনের সভায় আলোচনা হয়। তবে, উত্তরবঙ্গ জুড়ে শিল্পপতিদের জন্য সমস্ত রকমের যোগাযোগ মাধ্যমের আরও উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্য সচিব।
মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, “উত্তরের সম্ভাবনাময় এলাকাগুলোতে শিল্পপতিরা শিল্প গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন। ২৪ হাজার কোটি টাকার শিল্প আগামী দু’বছরের মধ্যে গড়ে উঠবে। যা খুবই ইতিবাচক। রাজ্য সরকার সমস্ত ধরনের সাহায্য করবে।” তিনি জানিয়েছেন, বাগডোগরা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে জমিজট কাটিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। খুব শীঘ্রই নতুন আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর পাবেন রাজ্যবাসী। এছাড়াও হাসিমারাতে নতুন বিমানবন্দর গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জমি সংক্রান্ত সমস্যা মেটানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি কোচবিহারের বিমানবন্দরের রানওয়ে সমস্যা মিটিয়ে সেখানে দ্রুত বিমানবন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। মালধ ও বালুরঘাটের ক্ষেত্রেও বিমানবন্দর গড়ার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। মালদহের জন্য ইতিমধ্যে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার থেকে মালদহের সঙ্গে দেশের অন্যন্য জায়গার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য গড়ে ওঠা সড়কপথের ক্ষেত্রেও যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখা হচ্ছে। বারোনী থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত গ্যাসের পাইপলাইন তৈরির ক্ষেত্রে যে সকল জমি সংক্রান্ত সমস্যা ছিল তাও মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। রেলপথ থেকে আকাশপথের সমস্ত জায়গা শিল্পপতিরা তাঁদের শিল্প সংক্রান্ত কাজে যাতে ভালোভাবে লাগাতে পারে সেদিকে নজর রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.