সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মাঝসমুদ্রে বিস্ময় কাণ্ড ঘটালেন এক মৎস্যজীবী৷ টানা পাঁচদিন ধরে জলে ভাসার পর বেঁচে ফিরলেন তিনি৷ বঙ্গোপসাগরের ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ দাস নামে ওই মৎস্যজীবী। বুধবার বিকেলে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি পণ্যবাহী জাহাজ তাঁকে মাঝসমুদ্রে ভাসতে দেখেন। ওই ব্যক্তির থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কাকদ্বীপ ফিশারম্যান সংগঠনে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ প্রশাসন।
আবহাওয়া দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের বিভিন্ন গ্রামের মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন৷ উদ্দেশ্য ছিল ইলিশ মাছ ধরে বেশি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা৷ বঙ্গোপসাগরের কেন্দুয়া দ্বীপের বেশ কয়েক কিলোমিটার পূর্বে ভারত-বাংলাদেশ জলসীমার কাছে আচমকাই সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়েন মৎস্যজীবীরা৷ এফবি দশভূজা, এফবি বাবাজি, এফবি জয় যোগীরাজ ও এফবি নয়ন নামে চারটি ট্রলার ডুবে যায়৷
ওই চারটি ট্রলারে থাকা ৬১ জন মৎস্যজীবী মাঝ সমুদ্রে ছটফট করতে থাকেন। আশপাশে থাকা অন্য কয়েকটি ট্রলার মৎস্যজীবীদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। এফবি বাবাজি ও এফবি জয় যোগীরাজ ট্রলারে থাকা মোট ৩০ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে অন্যান্য ট্রলারগুলি। নিখোঁজ হয়ে যায় এফবি নয়ন ও এফবি দশভূজা নামের আরও দু’টি ট্রলার। চারদিন কেটে গেলেও ২৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
অবশেষে বুধবার মেলে সুখবর৷ জানা যায়, ওপার বাংলাতেই রয়েছেন মৎস্যজীবীরা৷ সুস্থ হলেই ফিরবেন এদেশে। এরপর ওইদিন বিকেলেই উত্তাল সমুদ্রে এক ব্যক্তিকে ভাসতে দেখে একটি পণ্যবাহী জাহাজ। নাবিকরা মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে বাংলাদেশের হাসপাতালে ভরতি করে। জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ দাস নামে ওই ব্যক্তি দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার নারায়ণপুরের বাসিন্দা। এরপরই বাংলাদেশের তরফে যোগাযোগ করা হয় কাকদ্বীপ ফিশারম্যান সংগঠনে। খবর পেয়ে রবীন্দ্রবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি তাঁদের পরিবারের সদস্য। সুস্থ হলেই তাঁকে দেশে ফেরানো হবে বলে বাংলাদেশ সূত্রে খবর। কিন্তু লাইফ জ্যাকেট, খাবার ছাড়া কীভাবে ৫ দিন সমুদ্রে ভেসে থাকলেন ওই ব্যক্তি তা ভেবে বিস্মিত সকলেই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.