অর্ণব আইচ: বিশাল বপু তার। কিন্তু গতিও নেহাত কম নয়। তার পেটে নয় নয় করে সেঁধিয়ে যেতে পারে আড়াইশো সেনা। তাই নাম তার হারকিউলিস। মঙ্গলবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বায়ুসেনার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পর এ রাজ্যের বর্ধমান জেলার পানাগড়েই তৈরি রয়েছে হারকিউলিস। দিন হোক বা রাতের অন্ধকার, পানাগড়ের ‘সুপার হারকিউলিস’ হাবে চলছে সেনা ও কমান্ডো মহড়া।
[গুজবের জেরে টান পড়েছে রুটি-রুজিতে, আতঙ্কে ভুগছেন ফেরিওয়ালারা]
পাক অধিগৃহীত কাশ্মীরে গিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনা বোমাবর্ষণ করে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর পাকিস্তানের দিকে থেকে কোনও প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না সেনা ও বায়ুসেনা আধিকারিকরা। যদিও তাঁদের মতে, বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না পাকিস্তানের সেনারা। বায়ুসেনার সূত্র খবর, যে কোনও অবস্থার জন্যই প্রস্তুত রয়েছে তাঁদের প্রত্যেকটি ‘অপারেশনাল বেস’। নর্দার্ন এয়ার কমান্ডের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বাঞ্চল বা ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিও নিজেদের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। তেমনই তৈরি রয়েছে পানাগড়ও। পানাগড়ে রয়েছে ‘সুপার হারকিউলিস’ হাব। এই ‘হাব’-এ রয়েছে অন্তত ৬টি অত্যাধুনিক ১৩০জে সুপার হারকিউলিস। গত দু’বছর ধরেই ‘অপারেশনাল বেস’ হিসাবে কাজ শুরু করেছে পানাগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটি। দিন ও রাতে চলছে হারকিউলিসের মহড়া। মহড়ার অঙ্গ হিসাবে হারকিউলিস বিমানের ভিতর দৌঁড়ে উঠছেন কখনও বায়ুসেনার ‘গরুড়’ কমান্ডো, আবার কখনও প্যারাট্রুপাররা।
[প্রশাসনের আবেদনেও কাজ হচ্ছে না, ফের ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি ভবঘুরেকে]
এমনকী, সীমান্তবর্তী এলাকায় কীভাবে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ করা যায়, সেই মহড়াও করছেন তাঁরা। কখনও বা এই বিমান যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের হাসিমারা বা বাগডোগরায়। আবার কখনও হারকিউলিস সেনাদের নিয়ে যাচ্ছে অরুণাচলের মেচুকা বা তাংওয়াং অথবা অসমের ছাবুয়ায়। পানাগড়ের আকাশে সুপার হারকিউলিস উঠে যাচ্ছে ৩০ হাজার ফুট উপরে। মহড়া চলার সময় কমান্ডো ও প্যারাট্রুপাররা ঝাঁপ দিচ্ছেন মাটিতে। নিঃশব্দে মাটিতে নামার পর কীভাবে একটি বিশেষ জায়গার দখল নিতে হবে, তার মহড়াও দিচ্ছে কমান্ডো বাহিনী। আবার সেই ‘অপারেশন’-এর শেষে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যেই এসে কমান্ডোদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে সুপার হারকিউলিস।
[‘ম্যাপ থেকে মুছে যাক পাকিস্তান’, বায়ুসেনাকে আরও উজ্জীবিত করলেন শহিদের বোন]
বায়ুসেনার সূত্র জানাচ্ছে, এমনভাবে এই মহড়া চলছে যে, যদি কমান্ডো বা সেনাদের পাকিস্তান বা চিন, যে কোনও সীমান্তের দিকে যেতে হয়, তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এই সুপার হারকিউলিস। এই বিমানে রয়েছে ইনফ্রারেড ক্যামেরা। অত্যন্ত কম শব্দ করে চলে এই বিমান। ওঠানামা করতেও লাগে কম জায়গা। সেনা বা প্যারাট্রুপারদের সঙ্গে সঙ্গে এই বিশাল বপুর বিমানটি বহন করতে পারে সেনা জিপ বা ট্যাঙ্ক। প্রয়োজন হলে মাঝ আকাশেই তেল ভরতে পারে। টানা বারো ঘণ্টা ধরে এই বিমানটি উড়তে পারে। তাই যে কোনও পরিস্থিতির জন্য সুখোই ৩০ বা মিরাজ ২০০০-এর মতো যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে হারকিউলিসকেও। এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর এল ৭০ বিমানধ্বংসী কামানও মহড়া চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.