সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: হাজার ডাকাডাকিতেও মেলেনি সাড়া। শৌচালয়ের বালতিতে গোঁজা মাথা। পানাগড়ের (Panagarh) হাটতলার ভাড়াবাড়িতে রহস্যমৃত্যু বায়ুসেনা কর্মীর। মৃত্যুর কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কাঁকসা থানার পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে খুন কিংবা আত্মহত্যার তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
ঘড়ির কাঁটায় এক মিনিটও এদিক ওদিক হয় না। প্রতিদিন সকাল হলেই নির্দিষ্ট সময়ে কাজে বেরিয়ে পড়েন বায়ুসেনা কর্মী আশিস কুমার। বছর তিরিশের যুবক আবার নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িও ফিরে আসেন। কিন্তু ব্যতিক্রম হল বৃহস্পতিবার। বেলা বাড়লেও বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না তিনি। খুলছেন না দরজাও। শরীর খারাপ বলেই ভেবেছিলেন প্রতিবেশীরা। তাই ভাড়াবাড়ির দরজা ধাক্কা দিতে থাকেন তাঁরা। তবে দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করলেও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি আশিসের। তাই বাধ্য হয়ে কাঁকসা থানার পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ আসে। আবারও দরজা ধাক্কা দেওয়া হয়। তবে তখনও নিরুত্তর আশিস। বাধ্য হয়ে দরজা ভাঙেন পুলিশকর্মীরা।
ভিতরে ঢুকে পড়েন উর্দিধারীরা। তবে ঘরে আশিসের দেখা মেলেনি। মেলেনি অস্বাভাবিক কোনও প্রমাণ। এবার শৌচালয়ে ঢোকে পুলিশ। তাতেই চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যায় একটি বালতির মধ্যে মাথা গুঁজে পড়ে রয়েছেন আশিস কুমার। তাঁকে ডাকাডাকি করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পুলিশ আশিস কুমারের গায়ে হাত দেয়। তাকে নাড়াচাড়া করতে গিয়েই পুলিশকর্মীরা বুঝতে পারেন আর বেঁচে নেই আশিস। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা আশিস কুমার। তবে কর্মসূত্রে প্রায় বছরখানেক ধরে পানাগড়ের হাটতলায় ভাড়াবাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। সেভাবে কারও সঙ্গে মিশতেন না আশিস। প্রতিবেশীরা জানান, নির্দিষ্ট সময় বাড়ি থেকে বেরতেন। এবং প্রতিদিন প্রায় একই সময় ঘরে ফিরতেন তিনি। কেউ সেভাবে তাঁর ভাড়াবাড়িতেও আসাযাওয়া করতেন না। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বায়ুসেনা কর্মীর। তবে আত্মহত্যা কিংবা খুনের তত্ত্বও ওড়ানো যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরাও। তাই আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উত্তরপ্রদেশে নিহতের আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.