স্টাফ রিপোর্টার: শ্রমিকের স্বার্থকে খর্ব করে শ্রমিক দরদী পার্টি সাজার ভান করেছিল সিপিএম। শ্রম দপ্তরকে নিষ্ক্রিয় রেখে আর্থিক দিক থেকে পঙ্গু করে রেখেছিল শ্রমিকদের। সেখানে শ্রমদিবস বাড়িয়ে, শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে তাদের জীবনের মানোন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার রুখে দিয়েছেন কেন্দ্র সরকারের অপচেষ্টাকেও। কেন্দ্র যেখানে শ্রমকোড চালু করে শ্রমিকদের স্বার্থ আরেক দফায় জলাঞ্জলি দিতে চাইছে, সেখানে কেন্দ্রের নীতিকে ‘মানবেন না’ জানিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র শ্রমিকের কথা ভাবছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় মঙ্গলবার শ্রম বাজেট পেশ করে এভাবেই শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বুঝিয়ে দিলেন, এই সরকার কতটা শ্রমিক দরদী।
২০১১ সালের পর রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর শ্রমিকদের ধাপে ধাপে উন্নতি হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, “বাম আমলে শ্রমিক প্রেম কতটা ছিল, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জন্য কী করেছেন, তার শতাংশের হার দেখলেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।” ১২৩৯.২২১৮ কোটি টাকার বাজেট পেশ করে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়ে দেন সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, সুবিধাভোগী আর আর্থিক সুবিধার মতো মাত্র তিনটি পরিসংখ্যান যদি দেখা যায়, তাতে দেখা যাবে ন্যূনতম সাড়ে ৫০০ শতাংশ থেকে শুরু করে একেকটি খাতে ২৮ হাজার শতাংশ মজুরি বেড়েছে মমতার সরকারের উদ্যোগে।
মূলত চা বাগান আর চটকল শ্রমিকদের স্বার্থে রাজ্য সরকার কী কী করেছে তা এদিন তুলে ধরেন মন্ত্রী। রাজ্যের চা বাগানগুলিতে এই মুহূর্তে ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার শ্রমিকরা কাজ করেন। বাগান আছে ২৮৫টা। সেখানে ২০১১ সালে শ্রমিকরা নগদ মজুরি পেতেন ৬৭ টাকা। সেটা এখন বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা। তবে সরকার ‘মিনিমাম ওয়েজেস’ নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি করেছে। তা নিয়ে অসংখ্যবার বৈঠক হলেও ‘মিনিমাম ওয়েজেস’ নির্ধারণ না হওয়ায় ‘ইন্টেরিম ওয়েজেস’ আপাতত ২৫০ টাকাই থাকবে বলে জানান। সেখানে অসমের চায়ের দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও সেখানকার বাগানের শ্রমিকরা মজুরি পান ২২৮ টাকা। ত্রিপুরায় পান ১৭৬ টাকা। মন্ত্রী মলয় ঘটকের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে শ্রমিকদের ৩৫ কিলো চাল দেন শ্রমিকদের পরিবার পিছু। আর অসমে এই চাল দেওয়া হয় ২০ কেজি। আর সেটা ৯ টাকা কিলো দরে তাঁদের কিনতে হয়। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সেটা বিনামূল্যে দিচ্ছেন। সঙ্গে রয়েছে ক্রেশ হাউস, হেল্থ সেন্টার। বিজেপির সরকারের সঙ্গে এটাই তফাত।” চটকল শ্রমিকদের মধ্যে এক সময় ঝাড়ুদার আর মেশিন-ম্যানে তফাত ছিল না। সকলের এক বেতন। আর মহার্ঘভাতা দেওয়া হত জমিয়ে রেখে, মাসিক কিস্তিতে।
শ্রমমন্ত্রীর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় এসে সবটা সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হয়। সঙ্গে দক্ষতা অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হয়েছে শ্রমিকের কাজ ও তার জন্য তাঁদের বেতন।” মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ সালে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা ছিল, ২০১০ সালে ছিল ১৫৭ টাকা। আর তৃণমূল আমলে সেটাই হল ৪৮৫ টাকা। এখন শ্রমিকপিছু খরচ ৭২০ টাকা। সবটাই সরকারের উদ্যোগে। মন্ত্রীর কথায়, “শ্রমিক অসন্তোষও নেই, মালিকও খুশি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.