রঞ্জন মহাপাত্র: এবার বোধহয় মধ্যবিত্তের নাগালে আসতে চলেছে ইলিশ৷ শুক্রবার দিঘা মোহনায় প্রায় পাঁচ টন ইলিশ ওঠায় একধাপে দাম কমেছে অনেকটা৷ বর্ষার মরশুম শুরু হতেই ইলিশের যোগান দেখে হাসি ফুটেছে মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীদের মুখে৷
গত দুটি মরশুমের তুলনায় এবার ইলিশের যোগান বাড়বে বলে দাবি মৎস্যজীবীদের৷ সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ৬১ দিন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গত ১৫ জুন থেকে ফের মাছ ধরার মরশুম শুরু হয়েছে৷ মরশুমের শুরুতে শুধু মাত্র কাঁথি মহকুমা থেকে প্রায় ২০০০ ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত প্রায় ১০০টি ট্রলার দিঘা মোহনায় ফিরে এসেছে৷ ওই ট্রলারগুলি থেকে প্রায় পাঁচ টন ইলিশ শুক্রবার শঙ্করপুরের পাইকারি মাছের বাজারে এসেছে৷ ইলিশের পাশাপাশি এসেছে পমফ্রেট ৫০ টন-সহ প্রায় ১৫০ টন বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ৷ যেমন পারশে, টাইগার প্রন, হোয়াইট প্রন, ভোলা, পাটিয়া, রুলি, পাপড়া, লোটে ইত্যাদি৷
এদিন সকাল থেকে এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলার বিভিন্ন বাজারে ইলিশ প্রিয় বাঙালি ভিড় জমিয়েছেন৷ গত কয়েক বছর সমুদ্রে ইলিশের আকাল দেখা দেওয়ায় মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ছিল ইলিশ৷ এবার কিন্তু মধ্যবিত্তের আয়ত্তের মধ্যে আসতে চলেছে সমুদ্রের এই রুপোলি ফসল৷ এমনিতেই এবারে আবহাওয়া ইলিশের পক্ষে অনুকূল৷ তার উপর ঝিরঝিরে বৃষ্টির সঙ্গে পূবালি হাওয়া শুরু হলে ইলিশের যোগান আরও বাড়বে বলে দাবি মৎস্যজীবীদের৷ ফলে এবার রাজ্যে ইলিশের চাহিদা পূরণ হবে বলে আশাবাদী মৎস্য দফতরের কর্তারা৷
এদিন দিঘা মোহনার খুচরো বাজারে ৬০০-৭০০ গ্রামের মাছ বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকা দরে৷ এক কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১০০০-১২০০ টাকায়৷ দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানান, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার ইলিশের যোগান বাড়বে বলে মনে হচ্ছে৷ অন্তত প্রথমদিনেই যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া গিয়েছে তা থেকে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ তাছাড়া এবার আবহাওয়াও ইলিশের অনুকূলে রয়েছে৷ তাই মরশুমের শুরুতে এত ইলিশ এসেছে৷ এর ফলে দামও অনেকটাই কমবে৷
মরশুমের শুরুতে ইলিশের দেখা মেলায় মৎস্যজীবীরা খুশি৷ এই সাফল্যের কারণ হিসাবে মৎস্যজীবীদের দাবি, বড় ইলিশ পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার এবার সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ ৪১ দিন বাড়িয়ে ৬১ দিন করায় এবং ইলিশ সংরক্ষণে গুরুত্ব বাড়ানোয় এবার প্রথম থেকেই ইলিশ উঠতে শুরু করেছে৷ শ্যামসুন্দরবাবু আরও জানান, এখনও যে সমস্ত ট্রলার সমুদ্রে রয়েছে তাদের কাছেও প্রচুর ইলিশ রয়েছে৷ তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে কয়েকটি ট্রলার বন্ধের সময় সমুদ্রে মাছ ধরেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি৷ তাদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে৷ প্রমাণ হাতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শুক্রবার দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানান৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.