অরূপ বসাক, মালবাজার: মালবাজারে চিতাবাঘ আতঙ্ক। চিতাবাঘের হানায় ত্রস্ত এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে বারবার বনকর্মীরা খাঁচা পাতলেও সেই খাঁচায় অধরাই থেকেছে চিতাবাঘ। খবর পেয়ে এলাকা পরির্শনে যায় নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সদস্যরা।
অনেকদিন ধরেই চিতাবাঘের আতঙ্ক গ্রাস করেছে মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ির মজুমদার কলোনির বাসিন্দাদের। আজ, সকাল ১১টা নাগাদ মজুমদার কলোনির বাসিন্দা সীমা রায় বাড়ির আবর্জনা ফেলতে গিয়ে দেখতে পান স্থানীয় বাসন্তী রায়ের বাড়ির পিছনে বসে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। সীমা রায় জানান, “আমি ভয়ে চিৎকার করে ওঠায় স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসেন। ততক্ষণে অবশ্য পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি।”
এর আগেও কয়েকদিন ধরেই চিতাবাঘটি ওদলাবাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোয় প্রায় ঘরবন্দি হয়েছিলেন স্থানীয়রা। বারংবার বনকর্মীদের খবর দেওয়া হলে তারা এসে জাল পেতে চিতাবাঘটিকে ধরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পরিবেশপ্রেমী নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সদস্যরা। তারা এলাকায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেরায় এলাকায়। তারাই জানান, লোকালয়ে এসে চিতাবাঘটি গোরু ছাগল ঘুরতে দেখেই খাবারের লোভে বারবার আসছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় থাকা মানাবাড়ি চা-বাগান বন্ধ পড়ে থাকায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে চিতাবাঘটি আস্তানা গেড়েছে এই চা-বাগানের ভিতরেই। ঘটনাস্থল থেকে চিতাবাঘের পায়ের ছাপও মেলে।
মালবাজার বনদপ্তরের রেঞ্জার বিভূতিভূষন দাস বলেন, “আমরা চিতাবাঘের খবর পেয়ে এলাকায় বনকর্মী পাঠাচ্ছি। এর আগেও এই বন্ধ চা-বাগানে বেশ কয়েকবার খাঁচা পাতা হয়েছিল। কিন্তু কোনওবারই খাঁচাবন্দি হয়নি চিতাবাঘ। এরপর আমরা বন্ধ মানাবাড়ি চা-বাগান থেকে খাঁচা তুলে নিই। তবে আবার মানাবাড়ি চা-বাগানে খাঁচা পাতা হবে।
কয়েকমাস আগেই সন্তান হারিয়ে একটি চিতাবাঘ মালবাজার এলাকায় এসে উপদ্রব শুরু করে। তাকে খাঁচাবন্দি করতে গিয়েও যথেষ্ট বেগ পেতে হয় বনকর্মীদের। সেই চিতাবাঘটিকে বন্দি করতে তাঁরা খাঁচা পেতে একটি নকল চিতাবাঘ খাঁচায় রেখে দেয়। পূর্ণবয়স্ক মহিলা চিতাবাঘটিও সন্তানের অপত্য স্নেহে সেবার খাঁচায় ধরা দেয়। তবে এবারের চিতাবাঘটিকে কাবু করতে বনকর্মীরা কী উপায় বাতলাবেন তা অবশ্য সময়ই বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.