ধীমান রায়, কাটোয়া: কাটোয়ার কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রা অর্থাৎ কার্তিকের লড়াই হল এই উৎসবের সবথেকে বড় আকর্ষণ। কিন্তু প্রশাসনের আপত্তিতে এবছর শোভাযাত্রা বন্ধের মুখে। শহরের অপরিসর রাস্তায় শোভাযাত্রা করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। তারই প্রতিবাদে পুরনো রুটেই অনুমতি চেয়ে মহকুমাশাসক ও পুর চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হলেন এলাকার পুজো উদ্যোক্তারা।
[শীতের কলকাতায় নয়া অতিথি, ওয়াটার-ট্যাক্সি চেপে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের সুযোগ]
কাটোয়া শহরে ৮৫ টি পুজো কমিটি প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই কার্তিক পুজো করে। বিসর্জনের রাতে একসঙ্গে বিভিন্ন পুজো কমিটি জাঁকজমক সহযোগে শোভাযাত্রা বের করে। কার্তিক মূর্তি-সহ অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি সাজানো হয়। এই শোভাযাত্রা ঘিরে প্রছন্ন প্রতিযোগিতা থাকে। আর একেই বলে কার্তিক লড়াই। যা দেখতে শুধু কাটোয়া নয়, দূর-দূরান্তের মানুষ ভিড় জমান। কিন্তু এ বছর পালটে যেতে চলেছে কার্তিক পুজোর চালচিত্র। প্রশাসন রাশ টেনেছে শোভাযাত্রার উপর। পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে আলোচনার পর পুলিশের জানিয়ে দেয় কাটোয়া শহরের সরু রাস্তাগুলি দিয়ে শোভাযাত্রা যেতে দেওয়া হবে না। যাঁরা শোভাযাত্রা করতে চান, তাঁদের বড় রাস্তায় যেতে হবে। তার জন্য নির্দিষ্ট রুট বেঁধে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের এই নির্দেশ অধিকাংশ পুজো কমিটি মেনে নিতে পারেনি। তারা আপত্তি জানায়। পুজো কমিটিগুলিকে তখন বলা হয়েছিল তাদের মতামত লিখিতভাবে মহকুমাশাসকের অফিসে জমা দিতে। কাটোয়া পুরসভার একাধিক ওয়াডের্র বেশকিছু নাগরিক মহকুমাশাসক ও পুরপ্রধানের কাছে আবেদন করেন। যাতে তাদের পুরনো রুটেই শোভাযাত্রা করতে দেওয়া হয়।
[শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা কীভাবে সর্বজনের হল? উৎসবের মাহাত্ম্য কী?]
এতদিন কার্তিক পুজোর অধিকাংশ কমিটির শোভাযাত্রা থানা রোড থেকে শুরু করে লেনিন সরণি, ডুবোডাঙ্গা, ডাবপট্টি, খড়ের বাজার, কারবালাতলা, বারোয়ারিতলা, শাঁখারিপট্টি, নিচুবাজার হয়ে থানা রোডে এসে শেষ হত। যদিও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, সরু গলি দিয়ে শোভাযাত্রা গেলে প্রচুর যানজট হয়। কোনও বিপদ ঘটলে কাউকে উদ্ধার করে আনা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই সাধারণ মানুষের স্বার্থে ও নিরাপত্তার জন্য রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। মহকুমাশাসক নিজে কাটোয়া শহরের বিভিন্ন রুট ঘুরে দেখেন। তারপর কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রার জন্য রুট পরিবর্তন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কার্তিকের লড়াই নিয়ে কাটোয়াবাসীর আলাদা আবেগ রয়েছে। পুজো পাগল লোকজন মনে করেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে যুক্তি থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে অনেকে রাজি না হওয়ায় জটিলতা বাড়বে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.