সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনুন্নত এলাকায় ‘দিদিকে বলো’-র প্রচারে জনসংযোগ যাত্রা করতে গিয়েছিলেন তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। কিন্তু জনসংযোগের বদলে হীতে বিপরীতই হল। স্থানীয় মানুষ রাস্তা-ঘাট, পানীয় জল নিয়ে অভাব-অভিযোগ জানাতে এলে, “এখন এটার সময় নয়” বলে চলে যান তিনি। পরে যুক্তি দেন ‘‘ভোটের আগে আসলে এসব শুনব।” যার দরুন, সেলিব্রেটি বিধায়ককে সামনে পেয়ে যে উৎসাহ, উদ্দীপনা মানুষের মধ্যে ছিল, তা নিমেষের মধ্যে ক্ষোভে বদলে গেল। একইসঙ্গে বারাসতে স্থানীয় কাউকে বিধায়ক করার যে দাবি গত বিধানসভার আগে উঠেছিল, এদিন তা আরও জোরালো হল।
[ আরও পড়ুন: ফের পুলিশের সাফল্য, ১৮ দিন পর ঘরে ফিরলেন আর জি কর হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ বৃদ্ধ]
জনসংযোগ বাড়ানোর কর্মসূচিতে শনিবার দুপুরে দলের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার ড্যামেজ কন্ট্রোলে রবিবার থেকে নামছে সংগঠন। এদিন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বারাসত পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন অঞ্চলে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বারাসত শহর তৃণমূল কংগ্রেস। তাতে যোগ দিয়েছিলেন বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল তাঁর। প্রথমে যান আপনপল্লিতে। সিনেমার নায়ককে দেখতে পাড়ার মহিলা থেকে বৃদ্ধ সবাই ভিড় করেন। একইসঙ্গে বর্ষাকালে এলাকায় জল জমার ফলে তাঁদের দুর্ভোগের কথাও জানান। সেখানে কোনওমতে ভিড় এড়িয়ে চলে যান তিনি। স্থানীয়দের দাবি শোনেন বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়। এরপর বিধায়ক যান রামকৃষ্ণপল্লিতে। সেখানে দলীয় কর্মী পেশায় রাজমিস্ত্রি গোকুল সরকারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন৷
[ আরও পড়ুন: বাড়ছে জনসচেতনতা, পুরুলিয়ায় প্রশাসনের কর্তাদের বসিয়ে পাঠ দিলেন মহিলারা]
ওই বাড়ি থেকে বের হতেই বিধায়কের কাছে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কেউ বলেন, “একবার চলুন। দেখুন কীভাবে জল জমে আছে।” পাশ থেকে আর একজনের আর্জি, “কত বছর ধরে কাউন্সিলরকে ড্রেনগুলি ঠিক করার কথা বলছি, কোনও কাজই হচ্ছে না। আপনি একবার দেখুন।” কিন্তু স্থানীয়দের এহেন আর্জি কোনওভাবেই শুনতে রাজি হননি বিধায়ক। টোটোয় চেপে তিনি বলেন, “এখন সময় নয়, অনেক কর্মসূচি আছে।”
[ আরও পড়ুন: পর্যটন ও চলচ্চিত্রের মেলবন্ধন ঘটাতে শিলিগুড়িতে আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসব ]
বিধায়ক চলে যাওয়ার পরও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রত্যেকেরই বক্তব্য, “দিদি বলেছেন, অভাব অভিযোগ জানাতে। ভেবেছিলাম বিধায়ক সেগুলি শুনতেই আসছেন। কিন্তু নিয়ম রক্ষার জন্য ঘুরে চলে গেলেন।” ওই এলাকার এক গৃহবধূ বলেন, “এমন লোক দেখানো কর্মসূচির মানে কী, বিধায়ক আমাদের কথাই তো শুনলেন না।” বারাসত পুরসভার কর্মী বলাই লোধ ওই এলাকারই বাসিন্দা। তাঁর বক্তব্য, “২০ বছর ধরে পাড়া গলিগুলি বর্ষার জলের তলায় চলে যায়। কাউন্সিলরকে বলে কিছু হয়নি। আমরা কাকে বলব?” এবিষয়ে বারাসতের উপপ্রধান তথা বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকাগুলি আগে ধানি জমি ছিল, পরে বসতি হয়েছে। তাই কিছু সমস্যা আছে। সেগুলির সমাধানও চলছে। মানুষ কিছু বলতে চেয়েছিলেন, রবিবার থেকে বারাসত শহর তৃণমূলের নেতা—কর্মীরা ওই এলাকায় গিয়ে অভাব অভিযোগগুলি শুনবেন। যতটা সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.