বিপ্লব দত্ত: চোর নয়, পুলিশের কড়া নজরে এবার টিকিবাঁধা পুরোহিত৷
বেআইনি ‘যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম’-আটকাতে শ্রীঘরে ঠাঁই হবে তাদের৷ নাবালিকা বিয়ে রুখতে এরকমই কড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে প্রশাসন৷ শুধু বিয়ে বন্ধই নয়, ছাদনাতলা থেকে গ্রেফতার করা হবে অনুষ্ঠানের ডেকরেটর, বিয়েবাড়ির মালিককেও৷
গত ছ’মাসে প্রায় ৬৫টি নাবালিকা মেয়ের বিয়ে আটকেছে প্রশাসন৷ তবে খবর মিলেছে, এর মধ্যে সাতটি মেয়ের ফের লুকিয়ে চুরিয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে পরিবার৷ বহুদিন ধরেই নাবালিকা বিয়ে আটকাতে চেষ্টা করছে নদিয়া জেলা প্রশাসন৷ খবর পেয়ে বিয়েবন্ধ করলেও শেষরক্ষা হয় না৷ পরে খবর পাওয়া যায়, ফের গোপনে নাবালিকা মেয়েটির বিয়ে ঠিক করেছে পরিবার৷ এবার নাবালিকা বিয়ে আটকাতে তাই কোমর বেঁধেছে নদিয়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি৷ দু’দিন আগে ধানতলার একটি ঘটনায় এই আইনের প্রয়োগও করেছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি৷ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে নাবালিকা পাত্রীর মা-কে৷ দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়া নাবালিকা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে হোমে৷ জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন রিনা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ধানতলা থানার বরণবেরিয়া গ্রামের ওই নাবালিকাকে ৩০ নভেম্বর উদ্ধার করে পুলিশ৷ তার পরিবার থানায় মুচলেকাও দেয় যে এখন বিয়ে দেবে না৷” অভিযোগ, বাড়ি গিয়েই ফের নাবালিকা মেয়েটির বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে পরিবারের লোকেরা৷ অন্য পাত্রের সঙ্গে বিয়েও দেওয়া হয় ওই নাবালিকার৷ দ্বিতীয়বার মেয়েটিকে উদ্ধার করে হোমে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ৷
অনেক সময় নাবালিকার বিয়ে ভাঙতে গেলে পরিবারের লোকেদের রোষের মুখেও পড়তে হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনের লোকেদের৷ এবার তাই ঝঞ্ঝাট এড়াতে আইনকে আরও কঠোর করার কথা ভেবেছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি৷ নাবালিকার বিয়ে রুখতে সকলের অংশগ্রহণ চাইছে কমিটি৷ সকলে মিলে যদি এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তবে একশো শতাংশ সফলতা আসবে বলেই মনে করছে তারা৷ নদিয়ার তাহেরপুর, নাকাশিপাড়া এলাকা থেকে প্রায়ই নাবালিকা পালিয়ে যাওয়ার খবর আসে৷ পুলিশের অনুমান, পরিবারের লোকজন জোর করে বিয়ে দেওয়ার আতঙ্কেই পালিয়ে যায় নাবালিকারা৷ রিনা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “নয়া আইনে চাইলেও বিয়ে দিতে পারবে না পরিবার৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.