ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: পাহাড়ের ঘোলা জলে এবার মাছ ধরতে নেমে পড়লেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী। গুরুংদের ইস্যুকে হাইজ্যাক করতে অবস্থানে মোর্চা ত্যাগী এই নেতা। গোর্খাল্যান্ড চাই, দরকার হলে গ্রেফতার করুন। এমন দাবিতে আসরে নেমেছেন হরকা। মোর্চার পদক্ষেপের নিন্দা করে আন্দোলন দিল্লিমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন জাপ নেতা। হরকার জেগে ওঠার দিনে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে মোর্চাকে রাজনৈতিক জবাব দিল তৃণমূল। গুরুংকে নজরবন্দি রাখতে পাতলেবাসে দুটি ক্যাম্প তৈরি হয়েছে।
জন আন্দোলন পার্টি নামে নতুন দল গড়ে বিধানসভা ভোটে হার। কালিম্পং পুরভোটে সেভাবে ছাপ ফেলতে না পারা। মোর্চা ছাড়ার পর রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই কোণঠাসা হরকা বাহাদুর ছেত্রী। গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বরাবর নরমপন্থী হিসাবে পরিচিত হরকা। পাহাড়ে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লেও, গোর্খাল্যান্ড ইস্যু গরম হতেই আবার ময়দানে দেখা গেল এই তাত্ত্বিক নেতাকে। শুক্রবার দুপুরে আচমকা কালিম্পং থানার সামনে হরকা বাহাদুর ছেত্রী পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। পোস্টারে লেখেন তিনি গোর্খাল্যান্ড সমর্থন করেন। এই দাবি যদি অন্যায় হয়, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে কালিম্পং থানার সামনে তাঁর ঘণ্টাখানেক অবস্থান কৌতুহল বাড়ায়। পাহাড়ের মানুষকে আবেগকে উসকে দিতে হরকার এই কর্মসূচি পাহাড় জুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। হরকার সাফ কথা, মোর্চা যেভাবে আন্দোলন করছে এটা সঠিক পথ বলে তিনি মনে করেন না। পাহাড়কে অচল করে ভাঙচুর চালিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করা সমর্থনযোগ্য নয়। আন্দোলন দিল্লিতে নিয়ে যেতে হবে। গোর্খাল্যান্ড রাজ্য দিতে পারবে না। আলাদা রাজ্যের সিদ্ধান্ত আটকাতেও পারবে না। এটা যে কথার কথা নয় তা বোঝাতে হরকা জানিয়ে দেন তাঁর প্রতিনিধিরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লি যাবেন। গুরুংয়ের নাম না করে হরকার বক্তব্য, গোর্খাল্যান্ড কারও পৈত্রিক সম্পত্তি বা কপিরাইট নয়। এই দাবি পাহাড়ের সবার। সূত্রের খবর, পরপর ভোটে খারাপ ফলের পর জন আন্দোলন পার্টিকে চাঙ্গা করতে এই পদক্ষেপ হরকার। পাশাপাশি কৌশলে মোর্চার হাত থেকে এই ইস্যু কাড়তে চেয়েছেন জাপ নেতা। গুরংদের সমালোচনার পাশাপাশি ভারসাম্য রাখতে পাহাড়ে পুলিশের ভূমিকারও নিন্দা করেছেন হরকা।
হরকার তৎপরতার মধ্যে তৃণমূলও সক্রিয় হয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল মিছিল করে। মিরিকের বিশাল মিছিলে মোর্চাবিরোধী স্লোগান উঠে। মোর্চার কর্মসূচি আটকাতে এদিন প্রশাসন ছিল সক্রিয়। সিংমারিতে নারী মোর্চার মিছিল আটকায় সেনাবাহিনী। গুরুংয়ের ওপর চাপ বাড়াতে তাঁর বাড়ির সামনে সিআরপিএফ ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। সেখানে মোর্চার চোরাগোপ্তা আক্রমণ সামলাতে গেরিলা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষ জওয়ানদের রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি গুরুংয়ের বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে পুলিশ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.